অরূপ বসাক,মালবাজার: সোমবার থেকে খুলল নাগরাকাটা ব্লকের বন্ধ থাকা হিলা চা বাগান। এই ঘটনায় দৃশ্যতই খুশি বাগান শ্রমিকরা। গত সাত জানুয়ারি শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বাগানটি। বাগান খোলার জন্য বেশ কয়েকটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। তবে সেগুলির সব কটাই ব্যর্থ হয়। ফের গত সপ্তাহে ডিএলসিতে শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বসে বাগান কর্তৃপক্ষ। সেই বৈঠকেই মেলে সবুজ সংকেত। ঠিক হয় পাঁচ মার্চে খুলবে হিলা চা বাগান। নিয়ম মেনে খুলল চা বাগানটি। হিলা চা বাগানে মোট ৭৭৯জন শ্রমিক রয়েছে। বন্ধ বাগান খুলে যাওয়ায় খুশি শ্রমিকরা।
বাগান খুলে যাওয়ায় খুশি চা শ্রমিক হিরালাল ওঁরাও, মুন্নি ওঁরাওরা। সকাল সকাল দল বেঁধে বাগান পরিষ্কারের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। তবে এদিন সবাই বাগানে হাজিরা দেয়নি। কেন না কুলি লাইনে এখনও চলছে হোলির মহৎসব। তাই আগামী মঙ্গলবার থেকেই কাজে যোগ দেবে সমস্ত শ্রমিকরা। বাগান খোলা প্রসঙ্গে তাঁদের বক্তব্য, বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই আমরা কাজ করব। এবার থেকে এভাবেই চলবে বাগানের কাজ। একইভাবে বাগান কর্তৃপক্ষও শ্রমিকদের সঙ্গে বোঝাপড়া করেই বাগান চালাবে। এমনটাই দাবি বাগান শ্রমিক সুভাষবাবুর।
গত সাত জানুয়ারি আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় হিলা চা বাগান। বাগান শ্রমিক রমেশ ওঁরাও, বিনীতা এক্কারা ওই দিন সকালে কাজে আসতেই দেখেন তালা ঝুলেছে বাগানের গেটে। এতেই বিপদে পড়ে বাগান শ্রমিকরা। কীভাবে সংসার চলবে তাই নিয়ে শুরু হয় দুশ্চিন্তা। সংসারের খরচ জোগাড়ের পাশাপাশি ছিল ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য টাকার সংস্থান করা। জমানো টাকা থেকে বেশ কয়েকদিন চললেও খুব শিগগির অশান্তি শুরু হয়। উপায় দেখতে না পেয়ে লাগোয়া ভুটানে কাজের খোঁজে যায় শ্রমিকরা। এরপর থেকে সেখানেই চলছিল কাজ। সপ্তাহে তিনদিন ভুটানে গিয়ে কাজ করে তারপর ফিরে আসত কুলি লাইনে। এভাবেই চলত সংসার সামাল দেওয়া। বাকি দিনগুলিতে বাগান খোলার জন্য লাগাতার আন্দোলন। এভাবে প্রায় মাসদুয়েক চলার পর পরিস্থিতি অনুকূল হয়। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে বাগান খোলার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। সেই সিদ্ধান্ত অনুসারেই এদিন ফের চালু হল মালবাজার মহকুমার নাগরাকাটা ব্লকের হিলা চা বাগান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.