পলাশ পাত্র: এক পুরকর্মীর মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য কৃষ্ণনগর পুরসভায়৷ অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিলেন পুরসভায় সাফাই কর্মীরা৷ যার জেরে ফের শহরে আবর্জনাস্তূপ গড়ে ওঠার আশঙ্কায় কৃষ্ণনগরবাসী৷
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার রাতে৷ কৃষ্ণনগরের হরিজন পাড়ার বাসিন্দা বছর বাহান্নর পুরকর্মী শিকারি হাঁড়ির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় তাঁর বাড়ি থেকে৷ প্রাথমিভাবে অনুমান, গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি৷ পরিবার সূত্রে খবর, ২০১৭ সাল থেকে তিনি বেতন পাননি৷ রোজ পুরসভায় গেলে, তাঁকে কাজও করতে দেওয়া হয় না, বসিয়ে রাখা হয়৷ টানা দু’বছর ধরে বেতন না পেয়ে চরম আর্থিক অনটনে ভুগছিলেন তিনি ও তাঁর পরিবার৷ সেই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দাবি৷
আজ সকালে শিকারী হাঁড়ির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ধরে অন্যান্য সাফাই কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন৷ পুরসভায় গিয়ে তাঁরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেন৷ শিকারী হাঁড়ির এই সহকর্মীরা জানাচ্ছেন, ২০১৭ সালে একদিন কাজ থেকে ছুটি নিয়েছিলেন তিনি৷ সেই ক্ষোভে তাঁকে কাজ থেকে বসিয়ে দেয় পুর কর্তৃপক্ষ৷ এবং একইসঙ্গে বেতন আটকে দেওয়া হয়৷ শিকারী হাঁড়ি রোজই কাজে যেতেন৷ কিন্তু তাঁকে বলা হত, কাজ করতে হবে না৷ দীর্ঘ দিন ধরে এভাবেই পুরসভায় শুধু শুধু যাতায়াত করতেন তিনি৷ তবে স্থায়ী কর্মী হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী, তাঁর বেতনও এভাবে আটকে রাখা যায় না বলে অন্যান্য কর্মীদের দাবি৷ পুর কর্তৃপক্ষ শিকারীর সঙ্গে পুরোপুরি বেআইনি কাজ করেছে, এই অভিযোগ তুলে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন৷
এবিষয়ে কৃষ্ণনগর পুরসভার সাফাই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার শ্যামল বিশ্বাস এনিয়ে কার্যত দায় এড়িয়ে বললেন, ‘উনি পুরসভায় আসতেন না৷ আমরা ওঁর সহকর্মীদের মারফত খবর পাঠিয়েছি৷ তবে লিখিতভাবে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি৷’ পুরসভার আগের প্রধান অসীম সাহা পালটা ওই সাফাইকর্মীর উপরেই দায় ঠেলে বলছেন, ‘চিঠি দিয়ে কেন সমস্যার কথা জানাননি তিনি?’ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক তথা কৃষ্ণনগর সদর মহকুমা শাসক সৌমেন দত্তর বক্তব্য, তিনি বিশদে কিছু জানেন না৷ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ এভাবে কাউকে দু’বছর ধরে বেতন না দেওয়ার মতো বড় অভিযোগ হয়ে থাকলে, প্রয়োজনে তার তদন্ত হবে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.