সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: নির্দিষ্ট সময়ের পরেও সদস্য সংখ্যার টার্গেট পূরণ হয়নি পুরুলিয়ায়। তাই আরও ১৫দিন সময় বাড়িয়ে নবনির্বাচিত সাংসদকেই মাঠে নামার নির্দেশ বঙ্গ বিজেপির৷ সেইসঙ্গে দলের জেলা সভাপতিকেও একাজে সক্রিয়ভাবে শামিল হতে বললেন নেতারা৷
গত লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহলের এই জেলায় তৃণমূলকে ধরাশায়ী করলেও দলের সদস্য সংগ্রহ করতে যে বিজেপিকে রীতিমত হোঁচট খেতে হচ্ছে তার বড় প্রমাণ মিলল, নির্দিষ্ট দিনের মধ্যেও সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রায় না পৌঁছানো। ২০২১-এর আগে পুরুলিয়া জেলা বিজেপি বনমহলের এই জেলায় সাত লক্ষ সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেয়। গত ৬ জুলাই থেকে পুরুলিয়ায় গেরুয়া শিবির অভিযান শুরু করে। ১১ আগস্টের মধ্যে সেই টার্গেট পূরণের কথা ছিল৷ কিন্তু দিনক্ষণ পেরিয়ে গেলেও সাত লাখ সদস্য এখনও হয়নি গেরুয়া শিবিরের৷ তাই বিজেপি রাজ্য কমিটি এই জেলায় সদস্য সংগ্রহ অভিযানের সময়সীমা আরও ১৫দিন বাড়িয়েছে।
বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘সাত লক্ষ সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। চলতি মাসের ১১ তারিখ ছিল শেষ দিন। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে আমরা ওই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারিনি। তাই আরও খানিকটা সময় বাড়িয়ে আমাকে ও সাংসদকে মাঠে নেমে কাজ করার কথা নির্দেশ হয়েছে। সেই মোতাবেক আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি।’ সেই নির্দেশমতো সোমবার দেখা গেল পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাতো ও জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী একসঙ্গে এই অভিযানে নেমে পারা ও সাঁওতালডিহি এলাকায় কাজ করেন। সোমবার সন্ধে পর্যন্ত এই সদস্য সংগ্রহ অভিযানে চার লাখের বেশি সদস্য হয়েছে বলে দাবি পুরুলিয়া জেলা বিজেপির৷
এই সদস্য সংগ্রহ অভিযানে দলের আট হাজার কার্যকর্তা যুক্ত রয়েছেন। এই কাজে জেলার ৪৭টি মণ্ডলেই তাঁদের প্রশিক্ষণ চলে। জেলা বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে জেলা বিজেপি এই সদস্য অভিযানে তিন লক্ষ সদস্য সংগ্রহ টার্গেট নেয়। কিন্তু রাজ্য কমিটি তা বাড়িয়ে পাঁচ লক্ষ স্থির করে দেয়। দলের জেলা নেতৃত্বকে এই বাড়তি দু’লক্ষের চাপ সামলাতে বেশ হিমশিম খেতে হয়৷ এই পরিস্থিতিতে তাঁরা সরকারি প্রকল্প পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিচ্ছে বলেও তৃণমূল অভিযোগ তুলেছিল। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সহ–সভাপতি তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিজেপির সদস্য সংখ্যার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার মধ্য থেকে এটাই পরিষ্কার, এই জেলার মানুষ তাদের থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন। বিজেপির প্রতি মোহভঙ্গ হচ্ছে। সময় যত গড়াবে বিজেপি থেকে এই জেলার মানুষজনের দূরত্ব ততই বাড়বে। এই জেলার আমজনতাকে মানতেই হবে এরাজ্যে তৃণমূলের কোনও বিকল্প নেই।’ তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি।
ছবি: সুনীতা সিং
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.