নন্দন দত্ত, সিউড়ি: দলের দুর্নীতি নিয়ে সোমবার বীরভূমের রাজনগরে ফের সরব হলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের নামে একা কেউ টাকা নেবেন না। কেউ যদি নেন, সবার সামনে রসিদ দিয়ে নেবেন। একা নিয়ে কেউ যদি বিপদে পড়েন, তাতে গ্রামবাসীরা যদি বাড়িতে চড়াও হয়,তাহলে দল কিন্তু তার পাশে দাঁড়াবে না।’ পাশাপাশি তিনি এও হুঁশিয়ারি দেন, জেলার বেশ কয়েকজন পঞ্চায়েত প্রধানকে দুর্নীতির দায়ে জেল খাটাবেন।
সোমবার রাজনগরের নজরুল মঞ্চে কর্মী সভার আয়োজন করে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস। পাঁচটি অঞ্চলের ৬৮ টি বুথের কর্মীদের নিয়ে এদিন বৈঠক করেন। বিশেষ করে গতবার লোকসভা নির্বাচনে রাজনগর যেখানে ৭ হাজারের বেশি ভোটে তৃণমূলকে এগিয়ে দিয়েছিল। সেখানে এবার ব্যবধান এক হাজারের নিচে। ফলে রাজনগর নিয়ে চিন্তিত তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। তাঁতিপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি তৃণমূলের থেকে এগিয়ে আছে। এই ফলাফলের পর এদিনের কর্মিসভায় এলাকার প্রধানকে দাঁড় করিয়ে অনুব্রত মণ্ডল হার নিয়ে জবাবদিহি চান৷ প্রধান নিজের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে বলেন, তিনি বুঝতে পারেননি৷ এরপরই জেলা সভাপতি নির্দেশ দেন, এলাকাবাসীর সমর্থন পেতে চলতি সপ্তাহেই মিছিলে নামতে হবে। অন্তত তিন হাজার কর্মী-সমর্থকের কমে যেন মিছিল না হয়, তা নিয়েও কড়া নির্দেশ দেন৷
দুর্নীতির পাশাপাশি কর্মীদের জনসংযোগের ওপর জোর দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। বলেন, ‘কেউ কেউ মোটর সাইকেল হাঁকিয়ে পাড়া বেড়াচ্ছেন৷ এই লাটসাহেবি চলবে না। এলাকার মানুষের কাছে যেতে হবে। এলাকার কিছু নেতা চিংড়ির মতন লাফাচ্ছে। তারা লাফাক। আমরা দেখে নেব। এলাকার উন্নয়ন করতে হবে। যখন ডাকবেন, তখনই আসব। দয়া করে আমাদের ভুল বুঝবেন না।’ কর্মীদের তিনি আশ্বস্ত করেন, ‘আমরা যদি কোনও ভুল করি আমাদের ভুল শুধরে দেবেন। আমি ভুল করতে পারি, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভুল বুঝবেন না।’
সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তৃণমূলের ভরাডুবি হলেও, বীরভূম জেলায় সফলই হয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও চারপাশে গেরুয়া হাওয়ার দাপট থেকে দলকে সামলে রাখতে তৃণমূল নেত্রী তাঁকে আরও বেশি দায়িত্ব দিয়েছেন৷ সেইমতো কাজে নেমেছেন অনুব্রত৷কর্মিসভা করে সকলকে সচেতন করা সেই কর্মসূচিরই অংশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.