সুমিত বিশ্বাস, ঝালদা (পুরুলিয়া): চিকিৎসক পুরুষ! সন্তান প্রসব করতে তাই আর হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান না গর্ভবতী মহিলারা। দিনের পর দিন ঝুঁকি নিয়ে ধাত্রী মায়েদের সাহায্যে বাড়িতেই সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন তাঁরা। এমন তথ্য সামনে আসায় চোখ কপালে উঠেছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের কর্তাদের। পুরুলিয়ার ঝালদা এক নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসে শনিবার স্বাস্থ্য দপ্তর, ব্লক ও মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলাশাসক। বৈঠক চলাকালীন ফোনে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। পুরুলিয়ার জেলাশাসকের ঘোষণা, সন্তানসম্ভবা মহিলাদের যদি হাসপাতালে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসেন, তাহলে আশাকর্মীদের মতোই তিনশো টাকা করে ‘ইনসেনটিভ’ পাবেন ধাত্রী মায়েরাও।
পুরুলিয়া জেলার প্রত্যন্ত ব্লক ঝালদা। ঝালদা এক নম্বর ব্লকের হুসেনডি ও কান্টাডি গ্রামে এখনও বাড়িতেই প্রসব হয় বলে জানা দিয়েছে। কিন্তু কেন? পুরুষ চিকিৎসক থাকার কারণে নাকি গ্রামে সন্তানসম্ভবা মহিলারা সরকারি হাসপাতালে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে চান না! ধাত্রী মায়েরা অন্তত তেমনটাই জানিয়েছেন। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানিয়েছেন, ‘মহিলাদের এমন ধারনার বশবর্তী হয়ে থাকা উচিত নয়। বাড়িতে প্রসব অবৈজ্ঞানিক। সন্তানসম্ভবা মহিলাকে বোঝাতে হবে ধাত্রীমায়েদেরই। তাঁরা যদি গর্ভবতী মহিলাদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে হাসপাতালে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারেন, তাহলে ‘ইনটেনসিভ’ দেওয়া হবে। ‘
শনিবার ঝালদা এক নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসে হুসেনডি ও কান্টাডি গ্রামের ধাত্রী মায়েদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। বৈঠকে ধাত্রী মা সবুর চাঁদ বিবি ও আঙ্গুরা বিবিরা বলেন, “হাসপাতালে পুরুষ চিকিৎসক থাকেন, তাই আমাদের গ্রামের গর্ভবতী মহিলারা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে চান না। বাড়িতেই প্রসব করাতে হয় আমাদের।’ স্রেফ ঝালদা এক নম্বর ব্লকই নয়, জেলার আরও দুটি ব্লকের পাঁচটি গ্রামেও গর্ভবতী মহিলারা বাড়িতে সন্তানের জন্ম দেন বলে জানা গিয়েছে। জেলাশাসক বলেন, ‘কোথায় বাড়িতে প্রসব হয় তার একটা ম্যাপ করেছি আমরা। সেই মোতাবেক আমরা কাজ করছি। তবে বর্তমানে এই জেলায় ৯৮ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব হয়। আমরা এবার একশো শতাংশের লক্ষ্যে এগোচ্ছি।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.