Advertisement
Advertisement

Breaking News

তিন বাবা

সন্তান কাণ্ডে নয়া মোড়, স্বামীকে ফেলে মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গেল স্বপ্না

স্বপ্না নিজেই স্বামীকে হাসপাতালে আসতে বলেছিলেন।

Woman runs away with her new born baby in Kolkata
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:July 25, 2019 11:02 am
  • Updated:July 25, 2019 12:33 pm  

স্টাফ রিপোর্টার: কথা ছিল গাঙ্গুলিবাগান থেকে সোজা গাড়ি যাবে রাজারহাটে। সেই মতোই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন স্বামী হর্ষ ক্ষেত্রী। স্ত্রী স্বপ্না নিজেই তাঁকে ফোন করে টাকা আনার কথা বলেছিলেন। এও বলেছিলেন, বুধবার তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাই হর্ষ যেন হাসপাতালে আসেন। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে হাসপাতালের সামনে থেকে মা ও মেয়েকে নিয়ে অটো ধরেন স্বপ্না মিত্র। রহস্য জিইয়ে রেখে এভাবেই শেষ হল ‘এক সন্তান-তিন বাবা’ কাণ্ডের প্রথম অধ্যায়।

[ আরও পড়ুন: কোন্নগরের হীরালাল কলেজে অধ্যাপক নিগ্রহের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২ টিএমসিপি সদস্য ]

Advertisement

গত শনিবার বিকেলে হুগলির উত্তরপাড়ার বাসিন্দা ২১ বছরের স্বপ্না মিত্রকে নিয়ে গাঙ্গুলিবাগানের আইরিশ হাসপাতালে আসেন স্থানীয় রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা দীপঙ্কর পাল। নিজেকে স্বামী বলে পরিচয় দিয়ে স্বপ্নাকে সেখানে ভরতি করেন। ৪০ হাজার টাকাও জমা করেন।  রবিবার একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন স্বপ্না। আর গোল বাধে তার পরেই। এর মধ্যেই হাসপাতালে এসে উপস্থিত হন নিউটাউনের ভিস্তা গার্ডেনের বাসিন্দা হর্ষ ক্ষেত্রী। তিনি স্বপ্নার স্বামী বলে নিজেকে দাবি করেন। বলেন, “আমিই সন্তানের বাবা। অতএব বাবা হিসাবে আমার নাম নথিভুক্ত করতে হবে।”

এ কথা শুনে আকাশ থেকে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা যে ঘরে মেয়েকে নিয়ে স্বপ্না ভরতি আছেন, সেই ঘরের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। সোমবার সন্ধেবেলা তৃতীয় বাবার উদয় হয়। প্রদীপ রায় বলে এক ব্যক্তি এসে দাবি করেন, তিনি স্বপ্নার ওই সন্তানের বাবা। মঙ্গলবার তিনিও ‘লোক নিয়ে আসবেন’ বলে বেরিয়ে যান। ইতিমধ্যেই নেতাজি নগর থানায় গিয়ে প্রদীপ ও দীপঙ্করের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেন হর্ষ ক্ষেত্রী। সোমবার মধ্যরাতে আইরিশ হাসপাতালে হাজির হয় নেতাজি নগর থানার পুলিশ। স্বপ্নাকে জেরা করে জানতে পারে, হর্ষ তাঁর প্রকৃত স্বামী। পিতৃত্ব নিয়েও ধোঁয়াশা কাটান। বলেন, হর্ষই তাঁর সন্তানের বাবা। এই পর্যন্ত ঠিকঠাকই ছিল। হর্ষ মান্যতা পাওয়ার পর চিত্রনাট্য থেকে উধাও হয়ে যান বাকি দুই বাবা। দীপঙ্কর এবং প্রদীপ। হাসপাতালের পক্ষ থেকে তীর্থঙ্কর ঘোষ (ম্যানেজার অপারেশন) জানিয়েছেন, বুধবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ছুটি দেওয়া হয় স্বপ্নাকে। বউ এবং মেয়েকে নিতে হাসপাতালে হাজির হয়েছিলেন হর্ষ। টাকাপয়সা মিটিয়ে, স্ত্রী স্বপ্না ও তাঁর সন্তানকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন।

[ আরও পড়ুন: ফের অশান্ত ভাটপাড়া, এবার পুরপ্রধানকে লক্ষ্য করে চলল গুলি ]

কিন্তু তার পরেই শুরু হয় নাটক। স্বপ্না আচমকাই বেঁকে বসেন! জানিয়ে দেন, হর্ষর সঙ্গে তিনি ফিরবেন না। সকলকে চমকে দিয়ে হুইল চেয়ার ছেড়ে, বাচ্চাকে নিয়ে দ্রুত উঠে পড়েন হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গড়িয়া-গোলপার্ক রুটের একটি অটোতে! তার আগে স্বপ্না বলেন, “আমার কোনও সমস্যা নেই আমার বাচ্চাকে নিয়ে। আমি কোনও মিডিয়া ডাকিনি, পুলিশও ডাকিনি। কোনও কথা নয় আর।” হর্ষ অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু স্বপ্না পালটা হুমকি দেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে পুলিশ ডাকবেন। যাদবপুরের দিকে চলে যায় অটো। হতাশ হর্ষ বলেন, “আমিই ওর স্বামী। সন্তানের বাবা। বাড়ি নিয়ে যাব বলেই তো এসেছিলাম, পুলিশ ডাকার কথা বলে চলে গেল! আমার সঙ্গে কোনও কথাও বলল না!”হর্ষ ছেত্রীর দাবি, তাঁকে স্বপ্নার মা ও দীপঙ্কর পাল হুমকি দিচ্ছেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, তিনি আইনি পদক্ষেপ নেবেন। যদিও দীপঙ্কর সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জানিয়েছেন, তিনি এখন কলকাতার বাইরে। স্বপ্না ছুটি পেয়েছেন এইটুকুই শুধু জানেন। বাকিটা তাঁর পক্ষে বলা সম্ভব নয়। তবে স্বীকার করেছেন, তাঁর জমা করা ৪০ হাজার টাকা হাসপাতাল ফেরত দেবে বলে বলেছে। কিন্তু কোথায় গেলেন স্বপ্না? দীপঙ্কর সাফ জানিয়েছেন, তাঁর বাড়িতে আসেননি স্বপ্নারা। কোথায় গিয়েছেন তাও জানেন না। খবর নেওয়ার চেষ্টা করবেন। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement