নন্দন দত্ত, সিউড়ি: জামাই এক ছেলে। থাকার মধ্যে শুধু শাশুড়ি। কুড়িয়ে বাড়িয়ে সম্পত্তিও কম নয়। কাজেই দীর্ঘ চার বছর ধরে বীরভূমের ভ্রমরকুল পঞ্চায়েতের আদরি গ্রামের বাসিন্দা হান্নান শেখকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ঘরজামাই থাকতে বলছিলেন। কিন্তু সব সম্পত্তি বেচে দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে উঠতে রাজি হননি হান্নান। তারই অজুহাতে শাশুড়ি কেরিমা বিবিকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে খুন করল পুত্রবধূ। ভ্রমরকুল পঞ্চায়েতের আদরি গ্রামে এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। শাশুড়িকে খুনের অভিযোগে হান্নানের স্ত্রী নাসিরা বিবিকে গ্রেপ্তার করেছে সাঁইথিয়া থানার পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই হান্নানের শ্বশুরবাড়ির লোকেরাও পলাতক। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে ভ্রমরকুল পঞ্চায়েতের আদরি গ্রামের বাসিন্দা হান্নানের সঙ্গে সাঁইথিয়া থানা এলাকার সিজাগ্রামের নাসিরা বিবির বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকেই নাসিরা ও তাঁর পরিবারের লোকেরা নানা অজুহাতে হান্নানকে ঘরজামাই থাকার জন্য ‘চাপ’ দিচ্ছিল। পেশায় ফল বিক্রেতা হান্নানের অভিযোগ, “গতকাল মা যখন সন্ধেবেলা নমাজে বসেছিলেন। তখনই নাসিরা পিছন থেকে একটি শাবল দিয়ে মায়ের মাথায় আঘাত করে। মা অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়লে হাঁসুয়া দিয়ে মাকে কুপিয়ে খুন করে৷ খুনের পর শাড়ি বদলে নাসিরা পড়শিদের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি জুড়ে দেয়। বলতে থাকে বাড়িতে ডাকাত পড়েছে। দুষ্কৃতীরাই শাশুড়িকে খুন করেছে! ঘটনার সময় আমি বাতাসপুরে ফলের দোকানে ছিলাম। আমার এক বন্ধুর থেকে খবর পেয়ে বাড়ি এসে দেখি মেঝেতে মায়ের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে।”
[দ্বিতীয়বার কন্যাসন্তানের জন্ম, সদ্যোজাতকে ‘খুন’ বাবা-মায়ের]
হান্নানের আরও দাবি, ‘‘আমার শ্বশুর শেখ সাবের আলির দ্বিতীয় কন্যা নাসিরা। শ্বশুর ও শাশুড়িই মূলত আমাকে ঘরজামাই থাকার জন্য বলতেন। সেইসঙ্গে নাসিরাও সব সম্পত্তি বেচে আমাকে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে থাকার কথা বলেছিল। কিন্তু আমি কোনও ভাবেই রাজি হইনি। মায়েরও এতে মত ছিল না। আর সেকারণেই স্ত্রী এমন কাণ্ড ঘটাল।’’ পড়শিদের কথায়, হান্নান ও নাসিরার মধ্যে নিত্যদিনই নানা বিষয়ে অশান্তি লেগে থাকত। শুক্রবার দুপুরে শাশুড়ি খুনে অভিযুক্ত স্ত্রী নাসিরা বিবিকে আদালতে তোলা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.