ধীমান রায়, কাটোয়া: ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে, আর মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে। তাদের গৃহশিক্ষকের সঙ্গেই পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন এক গৃহবধূ। প্রেমে এতটাই বেপরোয়া হয়ে ওঠেছিলেন যে, প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ও শ্বাসরোধ করে স্বামীকে খুন করতেও হাত কাঁপল না! মনুয়াকাণ্ডের ছায়া এবার পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায়। অভিযুক্ত মহিলা ও তার প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় অপরাধ স্বীকার করেছে ধৃতেরা।
কাটোয়ার বিজয়নগর গ্রামে বাড়ি সুজিত মণ্ডলের। এলাকার মিষ্টির দোকানে কাজ করতেন তিনি। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ভরা সংসার। একমাত্র ছেলের সঙ্গে কাছেই থাকতেন সুজিতের বাবাও। পরিবারের লোকেদের দাবি, বুধবার রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর স্ত্রী ও দুই সন্তানের সঙ্গে নিজের ঘরেই শুয়েছিলেন সুজিত। কিন্তু বৃহস্পতিবার বেলা গড়িয়ে গেলেও ঘুম আর ভাঙেনি। শেষপর্যন্ত ঠেলাঠেলি করতে গিয়ে তাঁরা বুঝতে পারেন, সুজিত মারা গিয়েছেন। ঘটনাটি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় কাটোয়া থানার পুলিশ।
কিন্তু, কীভাবে মারা গেলেন সুজিত মণ্ডল? বউমা শম্পার বিরুদ্ধে ছেলেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের বাবা। জ্যোতিষচন্দ্র মণ্ডলের বক্তব্য, তাঁর নাতি ও নাতনিকে বাড়ি এসে পড়াতেন নয়ন পাল নামে গ্রামের এক যুবক। তাঁর সঙ্গে বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্ক জড়িয়ে পড়েছিলেন সুজিতের স্ত্রীর। প্রতিরাতে স্বামী, এমনকী দুই সন্তানকেও ঘুমের ওষুধের খাইয়ে প্রেমিকের সঙ্গে অবাধে মেলামেশা করতেন ওই গৃহবধূ। এই নিয়ে বাড়িতে অশান্তিও হত। তদন্তকারীদের দাবি, বুধবার রাতে সুজিতকে মেরে ফেলার জন্য চপ-মুড়ির সঙ্গে পাঁচটি ঘুমের ওষুধ খাইয়েছিলেন শম্পা। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে ওই গৃহবধূ বুঝতে পারেন, তাঁর স্বামী তখনও বেঁচে আছেন। এরপর প্রেমিক নয়নকে খবর পাঠান তিনি। দু’জনে মিলে বালিশ দিয়ে শ্বাসরোধ করে সুজিত মণ্ডলকে খুন করেন। বৃহস্পতিবার রাতেই অভিযুক্ত শম্পা মণ্ডল ও তার প্রেমিক নয়ন পালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.