ধীমান রায়, কাটোয়া: ‘মানুষ বড়ই শস্তা, কেটে, ছড়িয়ে দিলে পারতো।’ কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার লাইনগুলো যেন সত্যি হয়ে উঠল কাটোয়ায় (Katwa)। এক চিলতে জমি নিয়ে বিবাদের জেরে কোপানো হল তিন মহিলাকে। প্রাণও গেল একজনের। বাকি দু’ জন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এই ঘটনায় মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর (FIR) দায়ের হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্তরা।
পূর্ব বর্ধমান (Purba Bardhaman) জেলার কাটোয়া থানার অগ্রদ্বীপের গাজিপুর বেলেঘাটা পাড়ায় ঝড়ু রাজোয়ার এবং মানিক রাজোয়াররা প্রতিবেশী। ঝড়ু রাজোয়ারদের বাড়ির পিছনে ফুট পাঁচেক চওড়া জায়গা রয়েছে। ওই জায়গা নিয়ে ঝড়ু ও মানিকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিবাদ। সেই জায়গাকে ঘিরেই এই বিবাদ। ঘটনার সূত্রপাত রবিবার রাত প্রায় সাড়ে দশটা নাগাদ। ঝড়ু রাজোয়ারের ভাইপো সঞ্জয় সেই সময় কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি ঢোকার আগে রাস্তায় মানিক রাজোয়ার,তারক রাজোয়ারদের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। তখনই ওই একচিলতে জায়গা নিয়ে সঞ্জয়ের সঙ্গে তাদের বচসা শুরু হয়।
পরিবারের অভিযোগ, মানিক-তারকরা সেসময় সঞ্জয়কে মারধর করতে শুরু করে। তাঁর চিৎকার শুনে বেরিয়ে আসেন বাড়ির অন্যান্য লোকজন। সঞ্জয়ের অভিযোগ, তাঁর বাড়ির লোকজন বেরিয়ে আসতেই মানিকদের পরিবারের আরও কয়েকজন হাঁসুয়া-লাঠি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। এর পরই তারা সঞ্জয়ের পরিবারের উপর হামলা চালায় বলে দাবি। হাঁসুয়ার কোপে জখম হন সঞ্জয়ের কাকিমা লক্ষ্মীদেবী, জ্যাঠা ঝড়ু রাজোয়ার এবং ঠাকুরমা পুষ্প রাজোয়ার। অল্পবিস্তর জখম হন পুষ্পদেবীর স্বামী রাবণ রাজোয়ারও।
প্রতিবেশীরা তাঁদের উদ্ধার করে রাতে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। গভীর রাতেই লক্ষ্মীদেবীকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। তাঁর ডানহাত ও কোমরের নিচে কোপানো হয়েছিল। বর্ধমান নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। আপাতত পুষ্পদেবী ও ঝড়ু রাজোয়ার কাটোয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সোমবার মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করানো হয়। যদিও ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্তরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.