সেন্টারের বাইরে উত্তেজনা।
সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লকের পূর্ণচন্দ্রপুর কমিউনিটি ডেলিভারি সেন্টারে এক মৃত শিশু প্রসবের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় উত্তেজনা। মৃত শিশুর পরিবারের অভিযোগ, ডেলিভারি সেন্টারে গাফলতিতেই গর্ভে থাকাকালীনই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। গোটা ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
উত্তর দুর্গাপুরের বাসিন্দা প্রভাতী হালদার চারদিন আগে এই সেন্টারে চিকিৎসা করাতে আসেন। সেন্টারের পক্ষ থেকে বলা হয় এখনই ভর্তি হতে হবে। পরীক্ষার পর জানা যায় গর্ভের সন্তানের ওজন ৪ কেজি। প্রসূতি মায়ের পরিবার বিপদ বুঝে কাকদ্বীপ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার কথা জানালে ওই ডেলিভারি সেন্টার কোনওভাবেই তাতে রাজি হয়নি বলে অভিযোগ। অ্যাম্বুল্যান্স দিয়ে সহযোগিতাও করেনি বলে দাবি তাঁদের।
প্রসব যন্ত্রণা তীব্র হলে মৃত শিশুর জন্ম হয়। প্রসূতির পরিবারের এক আত্মীয় মঙ্গল সর্দারের অভিযোগ, কোনও চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতেই একজন সাধারণ কর্মী প্রসব করিয়েছেন। চারকিলো ওজনের শিশুটি ভূমিষ্ঠ করতে না পেরে তাকে গর্ভেই মেরে ফেলে মৃত সন্তান প্রসব করিয়েছেন তিনি। এর পরই দীর্ঘসময় ধরে ডেলিভারি সেন্টার ও পরিবারের বাদানুবাদ চলে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গিয়েছে, প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় জরুরি প্রয়োজনে সরকারি প্রকল্পের এই ডেলিভারি সেন্টারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি এনজিওকে। এনজিও পরিচালিত ওই সেন্টারটি প্রতি ডেলিভারির জন্য রাজ্য সরকার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পায়।কিন্তু সমস্ত কিছু ওখান থেকে কিনতে হয় বলে অভিযোগ। বাইরের কোন মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্ট গ্রহণ করা হয় না। এদিকে গোটা ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয় ওই প্রসবকেন্দ্র ঘিরে। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলার সিএমওএইচ ডা: জয়ন্ত সুকুল বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। বৃহস্পতিবারই ডেপুটি সিএমওএইচ ও এক শিশু বিশেষজ্ঞকে ওই কমিউনিটি সেন্টারে তদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। কমিউনিটি ডেলিভারি সেন্টারে চিকিৎসক এবং একজন নার্স থাকার কথা। তাঁরা সেই সময় ছিলেন না তা দেখা হবে।”
এছাড়াও রোগীর পরিবার কাকদ্বীপ হাসপাতালে রেফার করার অনুরোধ জানালেও তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন সিএমওএইচ। এছাড়াও ওই সেন্টারের নানা অব্যবস্থার অভিযোগ নিয়েও প্রতিনিধি দলকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, ‘গাফিলতি প্রমাণ হলে ওই এনজিওকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.