ছবিটি প্রতীকী
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: রাতে হঠাৎ-ই প্রসব বেদনা ওঠে। ফোন করেও মেলেনি সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স। বাধ্য হয়ে রাস্তাতেই সন্তান প্রসব করলেন এক গর্ভবতী মহিলা। জন্ম নেয় এক ফুটফুটে কন্যাসন্তান। ঘটনাটি ঘটেছে বাসন্তীর ঝড়খালির পার্বতীপুরে।সদ্য ‘মা’ হওয়া ওই মহিলার নাম প্রমীলা সরকার।
[আরও পড়ুন: উধাও মানি অর্ডারের টাকা, ২ মাস ধরে পোস্ট অফিসে ঘুরে হয়রান কৃষক ]
স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত ৮ টা নাগাদ হঠাৎ-ই পার্বতীপুরের বাসিন্দা পিন্টু সরকারের স্ত্রী প্রমীলার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। কাছেই বাসন্তী ব্লক হাসপাতাল। কিন্তু, নেই অ্যাম্বুল্যান্স। গতিক ভাল নয় বুঝে ওই মহিলার পরিবারের লোকজনের রিকশা ভ্যানে করেই প্রমীলা দেবীকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন। তবে, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার জন্য ফোনাফুনি করতেই খানিক দেরি হয়ে যায়। অতঃপর হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মাঝরাস্তায় রিক্সা ভ্যানে সন্তান প্রসব করেন প্রমীলা। সূত্রের খবর, প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার পরই মুহূর্তমাত্র সময় নষ্ট না করে প্রমীলা সরকারের পরিবারের লোকজন তাঁকে বাসন্তী ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার জন্য হেল্প লাইন ১০২ নম্বরে ফোন করেন। তবে, ফোন করতেই অ্যাম্বুল্যান্সের হেল্প লাইন নম্বরের তরফ থেকে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয় যে সেসময় কোনও অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো সম্ভব নয়। কারণ, অ্যাম্বুল্যান্স নাকি ছিলই না তাঁদের কাছে। বাধ্য হয়ে প্রমীলার পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে একটি ভ্যান রিকশা ডেকে ঝড়খালির বড় রাস্তার কাছে তাঁকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে। কিন্তু, ইটের রাস্তা দিয়ে ওই গর্ভবতী মহিলাকে নিয়ে যাওয়ার সময়ে রাস্তাতে প্রসব করেন তিনি। রিকশাতেই প্রমীলা জন্ম দেন এক কন্যা সন্তানের। পরে সেখান থেকে অন্য একটি গাড়ি ধরে বাসন্তী ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় প্রমিলা এবং তাঁর সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মা এবং সন্তান দু’জনেই আপাতত সুস্থ রয়েছেন।
[আরও পড়ুন: শিকেয় সমুদ্র দর্শন, দ্বিগুণ ঘরভাড়া দিয়েও হোটেল মিলছে না দিঘায়]
এপ্রসঙ্গে প্রমীলার আত্মীয়া কনক সরকার প্রশ্ন তুলেছেন সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বারবার যথাযথ সরকারি পরিষেবার কথা বলেন। সেখানে দাঁড়িয়ে গর্ভবতী মাকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে গিয়ে প্রবল বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের পাওয়ার জন্য মঙ্গলবার রাতে বারবার হেল্প লাইন নম্বর ১০২-এ ফোন করেও কোনও পরিষেবা পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে রোগীকে রিকশা করে বড় রাস্তায় নিয়ে যাচ্ছিলাম অন্য গাড়ি ধরার জন্য। কিন্তু তার আগেই রাস্তাতে প্রসব হয়ে গেল। এক্ষেত্রে মারাত্মক বিপদও ঘটতে পারত। তবে, মা এবং সন্তান দু’জনেই সুস্থ রয়েছেন এখন।” এবিষয়ে বাসন্তীর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সৈকত বেরা জানান, এবিষয়ে তাঁকে কেউ কোনও অভিযোগ জানায়নি। তবে এমন একটি ঘটনার কথা তাঁর কানে এসেছে। এর পাশাপাশি তিনি এও বলেন যে, “অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার হেল্প লাইন ১০২ নিয়ে অনেকের কাছ থেকে বিভিন্নরকম অভিযোগ আসছে। বিষয়টি নিয়ে অতি শীঘ্রই প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা শুরু হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.