ধীমান রায়, কাটোয়া: ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করার পর আশ্বাস পেয়েছিলেন। তারপর নিজেই সটান চলে গিয়েছিলেন কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে। আরজি ছিল একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই। বাড়িতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না হলেও সমস্যা মিটল কাটোয়ার মন্দিরা চক্রবর্তীর।
স্বামী ছেড়ে চলে গিয়েছেন। কাটোয়ার গোঁপখাজি গ্রামে জরাজীর্ণ টালির চালের ঘরে দুই ছেলেকে নিয়ে থাকেন মন্দিরাদেবী। সেলাইয়ের কাজ করে সামান্য যা আয় করেন, তা দিয়েই চলে সংসার। দিন কয়েক আগে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে টালির বাড়ির একাংশ। ৩ অগাস্ট ‘দিদিকে বলো’ নম্বরে ফোন করেন মন্দিরাদেবী। এরপর ১০ অগাস্ট সটান হাজির হন কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। মন্দিরা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়নি। ওনার অফিসের একজন আমায় আশ্বাস দেন। বাড়িতে ফেরার পরদিনই প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমার কাছে ফোন আসে।’
শনিবার গোঁপখাজি গ্রামে বাড়িতে গিয়ে মন্দিরা চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করেন কাটোয়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কণিকা বায়েন। সোমবার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে বলেছেন তিনি। সূত্রের খবর, ‘দিদিকে বলো’ নম্বরে ফোন আসার পর তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর। কাটোয়ার মন্দিরা চক্রবর্তীর বাড়ির অবস্থা খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় জেলা প্রশাসনকে। সরকারের উদ্যোগে খুশি স্বামী পরিত্যক্তা ওই মহিলা। তিনি বলেন, ‘বহুদিন ধরে সরকারি আবাস যোজনায় ঘরের জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত ও নেতাদের বলেছি। সুরাহা হয়নি। কিন্তু দিদির কাছে একবার গিয়েই এই ফল পাব কল্পনা করতে পারিনি।’
লোকসভা ভোটের শোচনীয় ফলের পর রাজ্য জুড়ে জনসংযোগের নয়া কৌশল নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। গত ২৯ জুলাইকে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কর্মসূচিকে সফল করতে নিজেদের এলাকায় গ্রামে গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিরা। যদি কেউ চান, তাহলে ফোন কিংবা ওয়েবসাইট মারফত সরাসরি তৃণমূল নেতৃত্ব, এমনকী খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও অভিযোগ জানাতে পারবেন। এই কর্মসূচিরই সুফল পেলেন কাটোয়ার মন্দিরা চক্রবর্তী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.