ছবি: জয়ন্ত দাস।
ধীমান রায়, কাটোয়া: বৃহস্পতিবার ‘স্বামী’র সঙ্গে ভাড়াবাড়িতে এসে উঠেছিলেন এক বধূ। রাত পার হতেই ওই ঘর থেকে উদ্ধার হল বধূর দেহ। ঘটনার পর পলাতক ‘স্বামী’। শুক্রবার সকালে কাটোয়ার ঘোষহাট পালপাড়ায় একটি টালির ছাউনি ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে বছর তিরিশের বধূর মৃতদেহ। গলায় গামছার ফাঁস। দেহটি বিধ্বস্ত। বিছানার উপর মুখ গুঁজে পড়ে থাকতে দেখা যায় দেহটি। স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে কাটোয়া থানার পুলিশবাহিনী।
মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি প্যান কার্ড। তাতে নাম রয়েছে সুমিত্রা পণ্ডিত। প্যানকার্ডটি নিহত বধূরই বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা বধূকে বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই খুন করা হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ধ্রব দাস জানান ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
কাটোয়া শহরের ঘোষহাট পালপাড়া এলাকায় যে ঘর থেকে এদিন দেহটি উদ্ধার হয়েছে ওই ঘরের মালিক জনৈক গোপাল কোঁয়ার। তিনি জানান, আঙ্গুর পণ্ডিত নামে তাদের এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে ওই মহিলা ও সন্টু নামে এক ব্যক্তিকে তিনি ঘরভাড়া দিয়েছিলেন। মাসে একহাজার টাকা ভাড়ার চুক্তি হয়েছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা আঙ্গুর পণ্ডিতের শ্বশুরবাড়ি পূর্বস্থলী এলাকায়। তার স্বামী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে নিখোঁজ। মহিলা ঘোষহাটে বাপের বাড়িতে থাকেন। আঙ্গুরদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন পূর্বস্থলীর পিলে এলাকার বাসিন্দা বিমল পণ্ডিত তার সম্পর্কে ভাগনা হন। বিমলই প্রথম আঙ্গুরদেবীকে ঘরভাড়া দেখে দিতে বলেছিলেন।
আঙ্গুরদেবী বলেন,” বিমল আমাকে বলে তার বন্ধু সন্টু ও সন্টুর স্ত্রী কাটোয়ায় ঘর ভাড়া খুঁজছেন। একটা কম টাকা ভাড়ার মধ্যে ঘর দেখে দিতে। সেই হিসাবে গোপাল কোঁয়ারের ওই ঘর দেখে দিয়েছিলাম। বৃহস্পতিবার বিমল, সন্টু এবং সুমিত্রা তিনজন এসেছিল। তাদের সঙ্গে বেশি জিনিসপত্র ছিল না। বলেছিল পরে অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে আসবে। কিন্তু এই ঘটনা ঘটতে পারে অনুমান করিনি।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকেই প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি হচ্ছিল। আর ওই সময়েই বধূকে খুন করে খুনি বা খুনিরা চম্পট দিয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া প্যানকার্ড অনুযায়ী তাঁর বাড়ি পূর্বস্থলীর জামালপুর নিমদহে। বাবার নাম বাবু পণ্ডিত। তবে জনৈক ‘সন্টু’ই তাঁর স্বামী কিনা, বিমলের সঙ্গেই বা কি সম্পর্ক? কেনই বা মহিলাকে ভাড়াবাড়িতে তুলে এনে খুন করা হল? এসব রহস্যের সমাধান করতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি সন্ধান চালানো হচ্ছে সন্টু ও বিমলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.