Advertisement
Advertisement
দগ্ধ

প্রেমিকাকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ, কৃষ্ণনগরের ঘটনায় দগ্ধ প্রেমিকও

৬ বছরের প্রেমের সম্পর্কে এমন করুণ পরিণতি!

Woman dies of burning, lover is also injured and his family is accussed
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 3, 2019 9:35 pm
  • Updated:August 3, 2019 9:35 pm  

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: ছ বছরের প্রেমের সম্পর্কে করুণ পরিণতি৷ জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল প্রেমিকার৷ দুটি হাত দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে প্রেমিক৷ নদিয়ার ধুবুলিয়ার ঝিটকেপোতা গ্রামের এমন ঘটনায় হতবাক গ্রামবাসীরা৷ মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে  প্রেমিক ও তার বাড়ির সদস্যরা মিলে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে খুন করা হয়েছে৷ অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তিনটে দিন মৃত্যুর সঙ্গে কঠিন লড়াইয়ে হার মানতে হল তাঁদের মেয়েকে৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত প্রেমিকের এক দাদাকে গ্রেফতার করেছে। অন্য অভিযুক্তরা এখনও পর্যন্ত পলাতক। 

[আরও  পড়ুন: রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা পেতে স্বামীকেই ফের বিয়ের ছক, ফাঁস বিজেপি নেতার স্ত্রীর কীর্তি]

 পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম পারভিনা খাতুন।  বয়স আঠারো বছর। ঝিটকেপোতা গ্রামেই বাড়ি। টানা ছ বছর ধরে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল প্রতিবেশী যুবক সেকেন্দর শেখের সঙ্গে। দু’জনের প্রেমের কথা জানতেন গ্রামের অনেকেই। যদিও আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল পরিবারের মেয়ে ছিলেন পারভিনা। তাই  সেকেন্দর শেখের বাড়ির লোকজন পারভিনার  সঙ্গে সেকেন্দরের বিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না।  ইদানিং পারভিনাকে কিছুটা এড়িয়েও চলছিলেন সেকেন্দর। তাতে বেশ মানসিক কষ্টে ভুগছিলেন পারভিনা। তারউপর বিয়ের যৌতুক বাবদ সেকেন্দরের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও যৌতুক দাবি করা হয় বলে অভিযোগ৷

Advertisement

গত বুধবার ভোরে  সেকেন্দরের বাড়ির  সামনে পারভিনাকে  অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দেখতে পান বাড়ির লোকজন।  দু’হাত আগুনে পুড়ে গিয়েছিল সেকেন্দরেরও। দু’জনকে ধুবুলিয়া হাসপাতালের পর কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। শনিবার পারভিনার মৃত্যু হয়। মৃতের দাদা পিন্টু মণ্ডল অভিযোগ করেছেন,‘টানা ছ’বছর ধরে আমার বোনের সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্ক ছিল সেকেন্দরের।  অথচ তার বাড়ির লোকজন আমার বোনের  সঙ্গে এই সম্পর্ক মেনে নিতে রাজি ছিলেন না। তবু আমরা জানার পর বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে ওদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। কিন্তু যৌতুক হিসাবে আমাদের কাছে পাঁচ  লক্ষ টাকা ও একটি চার চাকার গাড়ি দাবি করা হয়। আসলে আমাদের প্রস্তাব এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই আমাদের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কথা জেনেও এত যৌতুক দাবি করা হয়েছিল।’ 

এরপর দু’জনের কথোপকথন রেকর্ডিং করে রাখত সেকেন্দার৷ মঙ্গলবার গভীর রাতে পারভিনাকে ডেকে পাঠায় তার প্রেমিক৷ অভিযোগ, সেকেন্দর ও তার মা পারভিনার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে  আগুন ধরিয়ে দেয়। সেসময় সেকেন্দর নিজের প্রেমিকাকে বাঁচানোর অভিনয় করতে চাওয়ায় তার দুই হাতে কিছুটা পুড়ে গিয়েছে। 

[আরও  পড়ুন: রাজ্যে প্রথম ডেঙ্গুর বলি, হাবড়ায় মৃত্যু ১ প্রাথমিক শিক্ষকের]

হাসপাতালের বেডে শুয়ে  সেকেন্দর বলেছেন, ‘পারভিনার সঙ্গে আমার বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। কিন্তু তাতে আপত্তি উঠেছিল। মঙ্গলবার রাতে পারভিনা আমাকে ফোন করেছিল। আমাদের মধ্যে কথাবার্তা হয়।  এরপর ভোররাতে ও আমাদের বাড়ি চলে আসে। আমাদের বাড়ির নতুন একটি ঘরে ঢুকে ও নিজেই  কেরোসিন তেল নিজের গায়ে ঢেলে দেয়।  আমি ওকে বাঁচাতে গিয়েছিলাম। তাতে আমার হাত পুড়ে গিয়েছে।’ ঘটনায় ক্ষুব্ধ পারভিনার পরিবার চাইছে সেকেন্দর এবং তার বাড়ির সকলের ফাঁসি৷ পারভিনার বাড়ির লোকজন  সেকেন্দর সহ  তার মা ও দুই দাদার নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ইতিমধ্যেই মইদুল সেখ নামে সেকেন্দরের এক দাদাকে গ্রেফতার করেছে। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement