ছবি: প্রতীকী
সুরজিত দেব, ডায়মন্ড হারবার: সাপে কামড়ে ছিল এক মহিলাকে। কিন্তু, তাঁকে হাসপাতালে না এনে সারারাত বাড়ি রেখে ওঝাকে দিয়ে ঝাড়ফুঁক করালেন বাড়ির লোকজন। এর জেরে অকালে প্রাণ হারালেন ওই গৃহবধূ। পরে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু, তারপরও মৃতদেহটি বাড়িতে নিয়ে এসে ঝাড়ফুঁক করানো হল। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের হার্ডউড পয়েন্ট উপকূল থানার কালিকাপুরে। মৃত ওই গৃহবধূর নাম মনোবীণা দাস(২৭)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার শ্বশুরবাড়ি কালিকাপুরেই ছিলেন ওই যুবতী। রাতে তাঁকে সাপে কামড়ায়। সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার না ডেকে খবর দেওয়া হয় স্থানীয় ওঝা ও গুণিনকে। এরপর ওই গৃহবধূর জীবন বাঁচানোর চেষ্টায় সারারাত ধরে চলে ঝাড়ফুঁক। কিন্তু, ক্রমেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত শনিবার সকালে ওই যুবতীকে নিয়ে আসা হয় কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু, চিকিৎসকরা তাঁকে পরীক্ষা করেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁদের অনুমান, অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার। কুসংস্কারের বশে ওঝা বা গুণিনের সাহায্য না নিয়ে রাতে হাসপাতালে আনা হত। তাহলে হয়তো প্রাণে বাঁচতেন তিনি।
চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণার পরই ওই যুবতীর আত্মীয়রা মৃতদেহটি কালিকাপুরের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান। তারপর ফের ওঝা ও গুণিন ডেকে ঝাড়ফুঁক শুরু করেন। ওই ওঝা বাড়ির লোকজনকে আশ্বাস দেয়, ঝাড়ফুঁক করলেই প্রাণ ফিরে আসবে ওই যুবতীর। কিছুক্ষণের মধ্যেই নাকি সকলে দেখতে পাবেন যে তিনি উঠে বসছেন। তখন তাঁকে কাঁচালঙ্কা দিয়ে পান্তাভাত খাইয়ে তবেই নাকি ছাড়বে ওঝার দল। এই খবর চারদিকে রটে যেতেই ভিড় বাড়তে থাকে মনোবাণীর বাড়ির সামনে। রাত পর্যন্ত চলে ঝাড়ফুঁক। খবর যায় পুলিশেও। পরে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ততক্ষণে অবশ্য পলাতক ওঝার দল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.