সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ক্রেতা সেজে সোনার দোকানে ঢুকে গয়না চুরি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করে এক মহিলা ও তার পুরুষসঙ্গীকে ধরিয়ে দিলেন দোকান মালিকই। দু’জনকেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় অপরাধ স্বীকার করেছে ধৃতেরা। তবে চুরি যাওয়া গহনাগুলি এখনও উদ্ধার করা যায়নি বলে জানা গিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলায়।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাতে, মহেশতলার সারেঙ্গাবাদে। দোকান বন্ধ করার সময় যখন স্টক মেলাচ্ছিলেন সোনার দোকানের মালিক, তখন তাঁর নজরে পড়ে, একজোড়া কানের দুল ও একটি হাতের বালা নেই। প্রথমে দোকানের কর্মচারীদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তিনি। কিন্তু গয়নার সন্ধান না মেলায় শেষপর্যন্ত দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বছর বত্রিশের এক মহিলাকে শনাক্ত করেন সোনার দোকানের মালিক। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির সারেঙ্গাবাদেই আরও একটি সোনার দোকান আছে। সিসিটিভি ফুটেজ যে মহিলাকে দেখা গিয়েছে, তার ছবি অন্য সোনার দোকানে পাঠিয়ে দেন তিনি। আর তাতেই গয়না চুরির রহস্যের ফাঁস হল।
জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে মহেশতলার সারেঙ্গাবাদে অন্য একটি সোনার দোকানে হানা দেয় অভিযুক্ত মহিলা। দোকানের কর্মচারী সতর্কই ছিলেন। ওই মহিলাকে দেখে সহজেই চিনতে পারেন তাঁরা। ওই মহিলাকে নানা কথাবার্তায় ব্যস্ত রেখে খবর পাঠানো হয় দোকানের মালিক, স্থানীয় বাজার কমিটির সদস্য ও পুলিশকে। মহেশতলা থানার পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, দোকানে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই ভেঙে পড়ে ওই মহিলা। নিজের কৃতকর্মের কথা স্বীকার করে নেয় সে। নিজেকে শাহিন খাতুন বলে পরিচয় দিয়েছে ওই মহিলা। তার বাড়ি মেটিয়াবুরুজে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে শাহিনকে গ্রেপ্তারের পর নাটকীয়ভাবে ধরা পড়ে যায় তার পুরুষসঙ্গীও। মহেশতলা থানার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ওই মহিলাকে ধরে আনার কিছুক্ষণ পরই থানায় হাজির হয় বছর পঁয়তাল্লিশের অমর কুমার সাউ। সে আবার নিজেকে শাহিনের স্বামী পরিচয় দিয়ে গ্রেপ্তারির কারণ জানতে চায়। সন্দেহ হওয়ায় অমরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন পুলিশ আধিকারিকরা। টানা জেরায় ওই ব্যক্তি স্বীকার করে নেয়, শাহিন যখন সোনার দোকানে হানা দিত, তখন দোকানের বাইরে নজর রাখত সে। সন্দেহজনক কিছু দেখলেই শাহিনকে সতর্ক করে দিত। আর শাহিন যদি কোনওভাবে ধরা পড়ে যেত, তাহলে স্বামী সেজে তাকে বাঁচাত অমর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.