ছবি: প্রতীকী।
অর্ণব দাস, বারাকপুর: শুধুমাত্র পারিবারিক বিবাদ! তার জেরেই একদিনের পুত্র সন্তানকে খুনের অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম শর্মিলা দত্ত। সোমবার মর্মান্তিক এই ঘটনার জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পানিহাটি পুরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষ নগর এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে ওই অঞ্চলের একটি পুকুরের ধারে এক সদ্যোজাতর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় হুলুস্থুল পড়ে যায়। খবর পেয়ে খড়দহ থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। প্রথমে এলাকাবাসীর অনেকেই এই ঘটনার সঙ্গে বহিরাগত যোগের আশঙ্কা করেন। শুরু হয় আলোচনা। তখনই স্থানীয় বাসিন্দা শর্মিলার গর্ভবতী হওয়ার প্রসঙ্গ উঠলে সকলের মনে সন্দেহ হয়। এর পরই এলাকাবাসী শর্মিলার বাড়ি গেলে সে অভিযোগ স্বীকার নেয়।
এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা পরিমল দাসের কথায়, “উনি (শর্মিলা দত্ত) সপ্তাহ খানেক আগে আমার দোকানে মাছ কিনতে এসেছিল। তখন আমার সন্দেহ হয় উনি মা হতে চলেছেন। এদিনের ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরই সন্দেহের বশে ওঁদের বাড়ি গিয়ে গর্ভবতী হওয়ার প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হয়। শর্মিলা সমস্ত কিছু স্বীকার করে জানান, বাচ্চা হওয়ার পর সে পুকুরে ফেলে দিয়েছেন। কেন এমনটা করেছেন তা বলেনি। এর পরই থানায় সমস্ত কিছু জানানো হয়।”
সন্তান জন্মানোর একদিনের মধ্যে শিশু হত্যার এই খবরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযুক্তর কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হন সকলে। স্থানীয় বাসিন্দা ঝুমা দাস জানান, সকালে পুকুরের সিঁড়ির জলেই সদ্যোজাতর দেহ পরে থাকতে দেখা যায়। শিশুটির নাড়িও ঠিকমত কাটা ছিল না। পরে জানলাম এলাকারই এক মহিলা এই কাজ করেছে। ওর কঠোরতম শাস্তি হওয়া উচিত।
[আরও পড়ুন: নেশার টাকা না পেয়ে বাবা-মা-বউদিকে ধারাল অস্ত্রের কোপ! আত্মহত্যার চেষ্টা যুবকের]
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের সঙ্গে পরিবারের বিবাদ চলছিল। এই কারণেই সদ্যোজাতকে খুন করেছে অভিযুক্ত। পুলিশের জেরার মুখে এমনটাই জানায় সে। যদিও শিশুকে আগে খুন করে পুকুরে ফেলা হয়েছে নাকি জীবিত অবস্থায় ফেলা হয়েছে সেটি এখনও পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। তবে, রবিবার বাড়িতেই শিশুর জন্ম হয়েছিল বলেই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের কারণ জানার পর বয়ান যাচাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বাড়িতে শিশু জন্মানোর জন্য চিকিৎসক বা অন্য কারোর সাহায্য নেওয়া হয়েছিল কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.