ছবি: প্রতীকী
শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ভিন রাজ্যে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল কিশোরীকে। এই প্রস্তাবের নেপথ্যেও যে অন্য কোনও চক্রান্ত লুকিয়ে থাকতে পারে, তা ভাবতে পারেনি সে। তাই তো বেশি ভাবনাচিন্তা না করেই রাজি হয়ে গিয়েছিল। তবে বেড়াতে নিয়ে পরিবর্তে বিক্রি করে দেওয়া হয় তাকে। এই অভিযোগকে ঘিরে বৃহস্পতিবার দুপুরে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল ডুয়ার্সের (Dooars) গয়েরকাটায়। গ্রেফতার অভিযুক্ত মহিলা।
ধৃত প্রমীলা রায় নামে ওই মহিলা গয়েরকাটার একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী। অভিযোগ, তিনি ওই কিশোরীকে বিহারের এক প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়। ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি কিশোরীকে দিয়ে নাচ করিয়ে টাকাপয়সা উপার্জন করত বলেই অভিযোগ। নাচ করতে না চাইলে ওই ব্যক্তি কিশোরীকে শারীরিক নির্যাতনও করত। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও করতে দেওয়া হত না তাকে। এদিকে মেয়ের চিন্তায় আকূল পরিজনেরা। বহু খোঁজখবরের পর পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা কিশোরীর সন্ধান পান। বিহারের সেই প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন কিশোরীর পরিজনেরা। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝতে পারে ওই ব্যক্তি। চাপের মুখে পড়ে কিশোরীকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
কিশোরীকে ‘বিক্রি’ করে দেওয়ার কথা জানতে পারেন প্রতিবেশীরাও। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনার জানাজানি হতেই এলাকার লোকজন অভিযুক্ত ওই মহিলার বাড়িতে বিক্ষোভ দেখায়। ক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে বাঁচতে কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়েন ওই মহিলা। পরবর্তীতে খবর দেওয়া হয় বানারহাট থানা এবং বিন্নাগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশকর্মীদের। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল চক্রবর্তীকে গোটা ঘটনাটি জানানো হয়। খবর পাওয়ামাত্র প্রত্যেকেই ঘটনাস্থলে দৌড়ে আসেন। অভিযুক্ত ওই মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে বিন্নাগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশ। নাবালিকাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। যদিও অভিযুক্ত মহিলার দাবি, অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সে নির্দোষ। তার তৎপরতায় কিশোরীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানায় সে। শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে অভিযুক্তকে তোলা হবে। অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করার ভাবনা পুলিশের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.