ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাকপুর: এবার এক দাগি আসামিকে নিয়ে বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে গেল বারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ বাহিনী। অভিযোগ, ওই ভাড়াটে খুনির সঙ্গীসাথীরা আস্তানা গেড়েছে ওই বাড়িতে। কিন্তু আগের বারের মতো এবারও খালি হতেই ফিরতে হল পুলিশকে। সার্চ ওয়ারেন্ট ও পুলিশ কর্মীদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট দেখতে চান সাংসদের ছেলে ও নিরাপত্তারক্ষীরা। সেগুলি না থাকায় বাড়িতে ঢোকার অনুমতি পায়নি পুলিশ। এর আগে অর্জুনের ভাইপোকে গ্রেপ্তার করতে অন্য একটি বাড়িতে হানা দিয়েছিল পুলিশ।
গত কয়েকমাস ধরে বারাকপুরের বিজেপি সাংসদের সঙ্গে পুলিশের টানাপোড়েন চলছেই। কখনও কো-অপরেটিভ ব্যাংকের দুর্নীতি মামলায় সাংসদের ভাইপোকে নোটিস ধরাচ্ছে পুলিশ। কখনও আবার দেখা গিয়েছে সাংসদের কনভয় থামিয়ে তাঁর এক অনুগামীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। মাসখানেক আগে অর্জুন সিংয়ের ‘দুর্গ’ মজদুর ভবনেও অভিযান চালিয়েছিল জগদ্দল থানা। ভাটপাড়া নৈহাটি সমবায় ব্যাংকের দুর্নীতি মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সাংসদের ভাইপো পাপ্পু সিং। তাকে গ্রেপ্তার করতে সরাসরি মজদুর ভবনে পৌঁছে যায় পুলিশ বাহিনী। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বৃহস্পতিবার ফের অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে হানা দিল পুলিশ। তবে এবার মজদুর ভবন নয়। মজদুর ভবনের কাছে একটি সাদা রঙের বাড়ি যেখানে সাংসদের কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তারক্ষীরা থাকেন সেখানে অভিযাান চলায় পুলিশ।
সম্প্রতি ভাটপাড়া এলাকার এক তৃণমূল কর্মী ধর্মেন্দ্র সিং ওরফে ধরুয়াকে গুলি করে খুন করার চেষ্টা চালায় দুষ্কৃতীরা। গুলিবিদ্ধ হলেও কপালজোরে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। সেই মামলায় ৩০ জুলাই গণেশ সাউ নামে এক কুখ্যাত দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করে ভাটপাড়া থানা। ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শুটআউটের পুনর্নির্মাণও করে পুলিশ। বারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি সাউথ অজয় ঠাকুর জানিয়েছেন, “গণেশ সাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে যে, তার বাকি সঙ্গীরা মজদুর ভবনের কাছে ওই সাদা বাড়িটিতে রয়েছে। সেটা জানার পরই পুলিশ ওই দুষ্কৃতীকে নিয়ে ওই বাড়িতে তল্লাশি চালাতে যায়। কিন্তু পুলিশকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমরা আদালত থেকে ওয়ারেন্ট নিয়ে ফের অভিযান চালাব।”
যদিও এই ঘটনার সম্পর্কে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাংসদ অর্জুন সিং। তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ করেন। অর্জুন সিংয়ের কথায়, “পুলিশ নানা অজুহাতে আমায় ও আমার পরিবারকে বদনাম করার চেষ্টা করছে। মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। প্রতিনিয়ত হেনস্তা করছে। আমি এই পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.