অর্ণব আইচ: পানাগড় থেকে চিন সীমান্তে পৌঁছতে এক ঘণ্টাও লাগে না সুপার হারকিউলিসের। এই সময়ের মধ্যেই প্রায় আড়াইশো সেনা নিয়ে চিনের সীমান্তে পৌঁছে যেতে পারে এই অত্যাধুনিক বিমান। আবার এই ১৩০ জে সুপার হারকিউলিস বিমান থেকেই সহজে শত্রুশিবিরের কাছাকাছি ঝাঁপিয়ে পড়ে আক্রমণ হানতে পারে প্যারাট্রুপার অথবা বায়ুসেনার ‘গরুড়’ কমান্ডোরা। তাই বায়ুসেনার কাছে এখন পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়ে ‘এয়ারফোর্স স্টেশন অর্জন সিং’য়ের গুরুত্ব অপরিসীম।
[ভারতীয় জাহাজে জলদস্যুদের হামলা রুখে দিল নৌসেনার ‘মার্কোস’ বাহিনী]
শুক্রবার পানাগড়ে এয়ার ভাইস মার্শাল বিক্রম সিং জানান, পানাগড় বায়ুসেনা ঘাঁটির পরিকাঠামো এখন এতটাই উন্নত যে, এই বিমানঘাঁটি থেকে শত্রুশিবিরের দিকে উড়ে যেতে পারে যে কোনও রকমের ‘ফাইটার’ বা যুদ্ধবিমান। চিনের সীমান্ত থেকে তুলনামূলকভাবে কম অথচ নিরাপদ দূরত্বের কথা মাথায় রেখে পানাগড়ে তৈরি হয়েছে ‘সুপার হারকিউলিস’ হাব। এখন এই ‘হাব’-এ রয়েছে ৬টি অত্যাধুনিক ১৩০জে সুপার হারকিউলিস বিমান। আরও দু’টি বিমান নিয়ে আসা হতে পারে এই ‘হাব’-এ। এবার থেকে ‘অপারেশনাল বেস’ হিসাবে কাজ শুরু করল পানাগড়ের বায়ুসেনা ঘাঁটি। তাই দিনে ও রাতে সারাক্ষণই মহড়া দিচ্ছে সুপার হারকিউলিস।
এই পানাগড়েই রয়েছে সেনাদের পার্বত্য বাহিনী। মহড়ার অংশ হিসাবে যথাসম্ভব কম সময়ের মধ্যে সুপার হারকিউলিস সেনাদের উড়িয়ে নিয়ে চলেছে চিনের সীমান্তে। কখনও বা এই বিমান যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের হাসিমারা বা বাগডোগরায়। আবার কখনও হারকিউলিস সেনাদের নিয়ে যাচ্ছে অরুণাচলের মেচুকা বা তাংওয়াং অথবা অসমের ছাবুয়ায়। আবার সীমান্তবর্তী এলাকায় চলছে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর মহড়াও। কারণ শত্রুপক্ষের শিবিরের কাছে সেনা ও প্যারাট্রুপারদের নামিয়ে দিয়েই অল্প সময়ের মধ্যে ফিরে যেতে পারে এই বিমান। আবার ‘অপারেশন’-এর শেষে সুপার হারকিউলিস এসে কম সময়ের মধ্যে তুলে নিয়ে যেতে সক্ষম পুরো বাহিনীকে। পানাগড়ের বায়ুসেনা ঘাঁটির রানওয়ের পাশে মহড়া দিচ্ছে সেনাবাহিনীর এল ৭০ বিমানধ্বংসী কামান। এই কামানের র্যাডার জানিয়ে দিচ্ছে কোনদিকে রয়েছে বিমান। সেইমতো স্বয়ংক্রিয়ভাবে কামানের নল ঘুরে চলেছে আকাশ লক্ষ্য করে।
[আইএসআইয়ের সঙ্গে জঙ্গিদের আঁতাঁতের কথা স্বীকার পাকিস্তানের]
সুপার হারকিউলিস বিমানে রয়েছে ইনফ্রারেড ক্যামেরা। অত্যন্ত কম শব্দ করে চলে এই বিমান। ওঠানামা করতেও লাগে কম জায়গা। এই বিমান বহন করতে পারে সেনা জিপ বা ট্যাঙ্ক। প্রয়োজন হলে মাঝ আকাশেই তেল ভরতে পারে। টানা বারো ঘণ্টা ধরে উড়তে পারে এই বিমান। তাই গভীর রাতেও শুরু হয়েছে যুদ্ধের মহড়া। রাতের অন্ধকার ভেদ করে পানাগড়ের বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে উড়ে যাচ্ছে সুপার হারকিউলিস। উল্লেখ্য, পানাগড়ে অত্যাধুনিক রাফালে যুদ্ধবিমান মোতায়েনের কথাও চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.