স্টাফ রিপোর্টার: অবশেষে এল শীতের বার্তা৷ আর মাত্র আগামী ৪৮ ঘণ্টার অপেক্ষা৷ আরও নামবে তাপমাত্রার পারদ৷ অন্তত, এমনটাই পূর্বাভাস দিচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর৷ আন্দামানে ঘনিভূত হওয়া প্রবল নিন্মচাপ ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় ‘ভরদা’-য় পরিণত হয়েছে৷ অন্ধ্র উপকূলে তা আছড়ে পড়বে৷ এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কাটলেই জাঁকিয়ে পড়বে শীত৷ দুর্যোগ কাটার পর একে একে আন্দামান থেকে ফিরে আসতে শুরু করেছে পর্যটকরা৷
শুক্রবার সকাল থেকেই পারদ কমতে শুরু করে৷ শনিবার সকালে, পারদ স্বাভাবিকের তুলনায় আরও এক ডিগ্রি কমেছে৷ আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, নিম্নচাপ যত অন্ধ্র উপকূলের দিকে সরে যাবে ততই রাজ্যের আকাশে ঢুকবে উত্তুরে হাওয়া৷ যার জেরেই আগামী দু’দিন আরও শীতের আমেজ পেতে চলেছে রাজ্যবাসী৷
যদিও শীত যে এখনই পুরোপুরি রাজ্যে ঢুকে পড়েছে তাতে শিলমোহর দিতে নারাজ আবহাওয়া অফিস৷ কারণ, তাঁদের দাবি, নিম্নচাপ অন্ধ্র উপকূলের দিকে সরে গেলেও সেখানে কী পরিস্থিতি হয় তার উপরেও এরাজ্যের আবহাওয়ার ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে৷ তবে গত সপ্তাহে গরম থাকলেও তুলনামূলক চলতি সপ্তাহেই শীতের আমেজ উপভোগ করতে শুরু করেছে রাজ্যবাসী৷ ভোরের দিকে কুয়াশার দাপট কিছুটা কমার পাশাপাশি প্রখর রোদ শীতের আমেজকে আরও একটু ইন্ধন জুগিয়ে চলেছে৷ ফলে বিকেল চারটে বাজার সঙ্গে সঙ্গেই হাতের তালু ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে শহরবাসীর৷
শনিবার দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ যা স্বাভাবিকের তুলনায় এক ডিগ্রি কম৷ আর তাই সকাল থেকে গায়ে উঠেছে সোয়েটার আর চাদর৷ বাড়ির ছাদে রোদ পোয়াচ্ছে কম্বল৷
ঠাণ্ডার এই আমেজকে কাজে লাগাতে ব্যস্ত ভ্রমণপিপাসু বাঙালি৷ ভোরের শিশিরের আদুল ছোঁয়া উপভোগ করতে সকাল থেকেই ময়দানে ভিড় বাড়িয়েছেন প্রাতঃভ্রমণকরীরা৷ বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেও শীতের সোনা রোদের আমেজ নিতে ময়দানে ভিড় করেছেন অনেকে৷
আর তাই শীতের মরশুমের ময়দানি ব্যবসা নতুন করে চাঙ্গা হয়ে ওঠার আশা দেখতে শুরু করছেন ব্যবসায়ীরা৷ ঘোড়ার গাড়ি থেকে ভিক্টোরিয়া৷ চিড়িয়াখানা থেকে জাদুঘর৷ রবিবার থেকেই সর্বত্র ভিড় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ সেই মতো প্রস্তুতিও সারা৷ তবে ভিক্টোরিয়ার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ঘোড়ারগাড়ির চালক বিশু মণ্ডল জানালেন, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই কিছুটা উৎসাহ দেখা যাচ্ছে৷ তাঁর আশা, এই আমেজ যদি চলতে থাকে তাহলে শনিবার ও রবিবার ব্যবসা ভালই হবে৷
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে রবিবার ও সোমবার আবহাওয়া একই রকম থাকার সম্ভাবনা৷ পরিষ্কার আকাশের পাশাপাশি সর্বনিম্ন্ তাপমাত্রা থাকবে ১৫-১৬ ডিগ্রির আশেপাশে৷ তবে আবহাওয়া বিশারদরা জানাচ্ছেন, দিনের বেলা যে আবহাওয়া তৈরি হচ্ছে রাতের দিকে সেই তাপমাত্রা আরও কম অনুভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ যাকে আবহাওয়া দফতরের পরিভাষায় বলা হয় ‘রিয়েল ফিল’৷ সাধারণত ১৫ ডিসেম্বরকে শীতের শুরুর মার্কিং জোন বলে ধরেন আবহাওয়াবিদরা৷ যেখানে পৌঁছতে আরও পাঁচদিন বাকি৷ কিন্তু এই পরিস্থিতি থাকলে, সঙ্গে উত্তুরে হওয়ার জোগান ক্রমাগত বাড়তে থাকলে রাজ্যে শীত আসার সরকারি ঘোষণাও হয়ে যেতে পারে আগামী সপ্তাহের শেষদিকে৷ এখন সেই আশাতেই বুক বাঁধছে রাজ্যবাসীও৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.