Advertisement
Advertisement

Breaking News

রূপালী

ল্যারিসার পর রূপালী, জিতলে সন্তান কোলেই সংসদে যাবেন সর্বকনিষ্ঠ জনপ্রতিনিধি

শেষ পর্যন্ত লড়াইটা চালিয়ে যেতে চান রূপালী।

Will take son to Parliament, says TMC's Rupali Biswas
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:April 27, 2019 2:09 pm
  • Updated:April 27, 2019 2:09 pm  

অভিরূপ দাস, রানাঘাট: কুইন্সল্যান্ড থেকে কলকাতার দূরত্ব ৯১৬২ কিলোমিটার। সোনালি দৌড় শেষ হলে দুই মহাদেশকে এক রেখায় মেলাবেন রূপালী। সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে রানাঘাটের সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থীর বিশ্বাস, তিনি পারবেন। জিতেই তিনি রিটুইট করবেন ল্যারিসাকে। কে এই ল্যারিসা?

[আরও পড়ুন: প্রচারে বেরিয়ে ফের আক্রান্ত ফুয়াদ হালিম, সিপিএম নেতাকে মারধরে কাঠগড়ায় তৃণমূল]

কয়েক বছর আগে অস্ট্রেলিয়া পার্লামেন্টে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল। সেখানে দেখা যায় পার্লামেন্টে অধিবেশন চলছে। সেনেটর ল্যারিসা ওয়াটার্স নিজের দু’মাসের সন্তানকে পার্লামেন্টে প্রকাশ্যেই দুগ্ধপান করাচ্ছেন। গোটা দুনিয়ার মায়েরা কুর্নিশ জানায় সে ছবি দেখে।  তিনিই ইতিহাসে প্রথম নারী, যিনি পার্লামেন্টে বসে সন্তানকে দুগ্ধপান করান। রক্ষণশীলরা সে ছবি দেখে আঁতকে উঠেছিলেন। যদিও তাতে পরোয়া না করে ওয়াটার্স টু্ইট করে লিখেছিলেন, “যুক্তরাষ্ট্রীয় সংসদে বসে সন্তান আলিয়াকে দুগ্ধপান করিয়ে আমি গর্বিত। আলিয়াই প্রথম শিশু যে এমন কৃতিত্ব স্থাপন করল।” এর পাশাপাশি, অন্যান্য দেশের পার্লামেন্টেও আরও বেশি করে নারী ও অভিভাবকদের প্রতিনিধিত্বও চেয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘আমায় দেখে আরও মায়েরা এগিয়ে আসুক, প্রমাণ দিক সন্তানকে নিয়েও যে কোনও কাজ করা যায়।’ সেই চাওয়াই যেন পূরণ হবে রূপালির সোনালি দৌড়ের শেষে।

Advertisement

রূপালীর কথায়, ‘‘ওই ছবিটা দেখেছি। আমার ছেলেরও তো মাত্র দেড় বছর বয়স। আমায় ছাড়া ও কিছুই বোঝে না। সাংসদ হলে আমিও ওকে সঙ্গে করে দিল্লি নিয়ে যাব সংসদের আলোচনায় অংশ নিতে।’’ ল্যারিসার সেই পবিত্র ছবি ভারতীয় সংসদেও দেখা যাবে তাহলে? এ প্রসঙ্গে রূপালী বলেন,  “ছেলের আমি ছাড়া আর কেউ নেই। আমার সন্তানকে আমি যেখানেই দুগ্ধপান করাই না কেন, সেটা সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত অধিকার। এতে কোনও অশ্লীলতা নেই।” ল্যারিসার সেই টুইটের নিচে নিজের ছবি দিয়ে রি-টুইট করতে চান রূপালি। ২৩ মে সবুজ আবির খেলার আগে তাই ল্যারিসাকেই টুইট করতে চান রূপালি। অকস্মাৎ স্বামী খুন হয়ে যাওয়ার পর রানাঘাটের রূপালীর হাতেই যেন ল্যারিসার ব্যাটন। সিঙ্গল মাদার আর ওয়ার্কিং উইমেন – শব্দ দু’টিকে সযত্নে মিশিয়েছেন। একা ছেলেকে খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো থেকে প্রচারের অ, আ, ক, খ, সমানতালে সামলাচ্ছেন তিনি।
                                           [আরও পড়ুন: কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ, তৃণমূলের বিরুদ্ধে কমিশনের দ্বারস্থ বিজেপি]

তিনি বলেন,  “আমি তো আগে কখনও ভোটে দাঁড়াইনি, এই প্রথম। আগে রাস্তাঘাটে খুব বেশি বেরোতাম না। প্রচারে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পথ চিনেছি। এক-দুই করে পথের সঙ্গীও বেড়েছে।”  মুখ্যমন্ত্রীর শংসাপত্র তাঁর জেদ বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুণ। তিনি বলেন, “আমায় মঞ্চে ডেকে দিদি বলেছেন, ওর মধ্যে আমি নিজের ছোটবেলা দেখতে পাই। এর চেয়ে বড় সার্টিফিকেট আর কিছু হয় না।” দেড় বছরের ছেলে সৌম্যজিতের মুখে এখনও কথা ফোটেনি। তাকে নিয়েই বাস্তবের রুক্ষ মাটিতে হাঁটছেন। এবার দাঁতে দাঁত চেপে রূপালী শেষ লড়াইটা জিততে চান। বিরোধীরা বলছে, সন্তান কোলে সহানুভূতিকে হাতিয়ার করছেন শাসক দলের প্রার্থী। এমনটা শোনা মাত্রই নিজের সমস্ত ফ্লেক্স থেকে সন্তানের ছবি সরিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, “সন্তান কোলে যদি কোথাও গিয়েও থাকি তবে সেটা প্রয়োজনে। ওকে কার কাছে রাখব? কিন্তু কোথাও গিয়ে বলিনি যে, সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে ভোট দাও।” ভোটে তাঁকে সাহায্য করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে গোটা পরিবার। সকাল ৭টায় বেরিয়ে চষে ফেলতে হচ্ছে পাড়ার অলিগলি।

তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, বর্ণপরিচয় বোঝার আগেই কি ইভিএম চিনতে শিখল একরত্তি সৌম্যজিৎ? রূপালির কথায়, “ও এখনও কিছু বোঝে না। শুধু এটুকু বুঝতে পারে, মা কোনও একটা কাজ নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। আপাতত প্রচারে ব্যস্ত মায়ের অভাব পড়শিদের আদরেই ভুলে থাকতে হচ্ছে সৌম্যজিৎকে। তবে তাঁর প্রয়াত স্বামী সত্যজিৎ না থেকেও আছেন রানাঘাটে। এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, “বিপদে আপদে পাশে দাঁড়াত সত্য। যত রাতই হোক, এক ফোনেই পাওয়া যেত তাঁকে।” রূপালীও জানিয়েছেন, “মানুষের জন্য করতে গিয়ে ও পরিবারকে সেভাবে সময় দিতে পারত না। কিন্তু ওকেই যে…।” রূপালি বলেন, “ভোটে জিতলে গ্রামের মায়েদের জন্য কিছু করতে চাই।” সম্প্রতি কলকাতা শহরের এক শপিং মলে নিজের শিশুকে স্তন্যপান করাতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হতে হয় এক মা-কে। তাঁর কথায়, “কলকাতার জাদুঘরে ল্যাকটেশন রুম তৈরি হয়েছে। মফস্বলেও আমি ল্যাকটেশন রুম তৈরি করতে চাই। প্রয়োজনে আমায় বাড়ি থেকে বেরোতে হয়েছে। চাই গ্রামের মেয়েরাও বেরিয়ে আসুক সন্তানদের নিয়ে। মায়েরা ঘরে বাইরে দুই জায়গাই সমানভাবে সামলাতে পারবে।”

[আরও পড়ুন: প্রচারে ভোজপুরী গানে কোমর দুলিয়ে মঞ্চ মাতালেন মুনমুন]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement