নন্দন দত্ত, নলহাটি: বিজেপি নেতার আক্ষেপ কমাতে পরবর্তী সভার আগে জেলাজুড়ে তাঁর জন্য রুটি আর পাটালি গুড় রাখার নিদান দিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। শুক্রবার নলহাটির স্কুল মাঠে বিজেপির পালটা সভায় মাঠ ভরতি জনসমাবেশে অনুব্রত মণ্ডলের সাংগঠনিক দক্ষতার ভিত্তিতেই ভোট করার আবেদন জানান তৃণমূল নেতারা।
এদিন কুণাল ঘোষ বলেন, “বিজেপির (BJP) ট্রেনি রাজ্য সভাপতি একটা লাউডগাকে কেউটে বলে বাজারে ছাড়তে চাইছে। জেলা থেকে বিজেপিকে হারিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের জবাব দিতে হবে।” একই সভায় ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নলহাটির মাটি স্বাধীনতা সংগ্রামী দুকড়িবালার রক্তে গড়া। এখানে গদ্দারির কোনও জায়গা নেই। তাই যারা গদ্দার তাদের কোনও সমর্থন দেবেন না।”
গত মঙ্গলবার নলহাটি শহরের স্কুল মাঠের অর্ধেক অংশে মঞ্চ করে সারা জেলার লোক এনেও মাঠ ভরাতে পারেনি গেরুয়া শিবির। এদিন সেই মাঠে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। জেলার সব নেতাদের সঙ্গে হাজির ছিলেন কুণাল ঘোষ ও ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। ভরা জনসভা থেকে তৃণমূলে থাকাকালীন শুভেন্দুর বিজেপির বিরুদ্ধে বিষোদ্গারের অডিও টেপ শুনিয়ে কর্মী সমর্থকদের সামনে কুণাল ঘোষ বলেন, কে গদ্দার? অনুব্রত মণ্ডলের জেলায় আসার পথে শুভেন্দু নাকি গুড় বাতাসা, নকুলদানা দেখতে পাননি বলে জানিয়েছিলেন। তাই কর্মী সমর্থকদের তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বলেন , “কোনও পাতলা গুড় বা ঝোলা গুড় নয়, একেবারে পাটালি, মোটা দেখে পাটালি তুলে রাখবেন।” বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে তাঁর সাংগঠনিক কৃতিত্বের জন্য বিজেপি কার্যত ভয় পেত। তাই ‘বাঘকে খাঁচায় রেখে দুটো শিয়ালকে পাঠিয়েছে এখানে’। বলেন কুণাল। বিজেপিকে আগামী লোকসভায় ক্ষমতাচ্যুত করারও ডাক দেন কুণাল ঘোষ। বলেন, “ওরা কেন্দ্রে আছে। ক্ষমতা গেলে নরেন্দ্র মোদি থেকে অমিত শাহ, তাঁদেরও হেফাজতে নেবে সিবিআই, ইডি।” এরপরই জনতার উদ্দেশে হুঙ্কার দেন, “আমরা দেখতে চাই ২০২৪ সালে লালকেল্লায় বাংলার মেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শাড়ি পরে দেশের জাতীয় পতাকা তুলছেন। তার জন্য তৈরি থাকুন।”
এদিকে, আজ অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বর দিনটি জনতাকে স্মরণ করিয়ে দেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, বাংলার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এদিনেই ১৯৪৩ সালে আন্দামান নিকোবরের সেলুলার জেলে ত্রিবর্ণ জাতীয় পতাকা তুলেছিলেন। এখনও সেই সংগ্রহশালায় ৫৮৫ জন দীপান্তরে থাকা বিল্পবীর নাম খোদাই করা আছে। যার মধ্যে ৩৯৮ জন বাংলার। যে তালিকায় শুভেন্দুর দল বিজেপির কোনও নেতার নাম নেই। বরং উলটে মুচলেকা দিয়ে বাঁচতে চেয়েছে তার দলের নেতারা।
ঋতব্রত নলহাটির সাওপাড়া গ্রামের স্বাধীনতা সংগ্রামী দুকড়িবালার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন। যার কাছে অনুশীলন সমিতির বিপ্লবীরা অস্ত্র থেকে নিজেরা আশ্রয় পেতেন। ব্রিটিশ পুলিশ দুকড়িবালার কোলে থাকা ন’মাসের শিশুকে নিয়ে দু’বছর কারাগারে বন্দি করে রেখেছিলেন। সেই মাটি কখনও গদ্দারকে সমর্থন করবে না বলে দাবি করেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.