সন্দীপ চক্রবর্তী: পুজোর আগে সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে ন্যূনতম বেসিক পে-র অঙ্ক বৃদ্ধির ঘোষণা করলেন তিনি, যা বেড়ে দাঁড়াল ১৭০০০ টাকা। আগে এই বেসিক পে ছিল ৭ হাজার টাকা। গ্র্যাচুইটির অঙ্ক ৬ লক্ষ থেকে বেড়ে ১০ লক্ষ টাকা হচ্ছে। শুক্রবার নেতাজি ইনডোরে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের এক অনুষ্ঠান থেকে এই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী বছরের পয়লা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন বেতন কাঠামো।
ডিএ বৃদ্ধির দাবিতে একাধিকবার রাজ্য সরকারি কর্মীরা সরব হয়েছেন। এনিয়ে এখনও হাই কোর্টে আইনি লড়াই চলছে। তারই মধ্যে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের রিপোর্ট হাতে পেয়ে ডিএ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও ঘোষণার সময়ে তিনি স্পষ্টই বলেন, ‘মামলা চলছে, আমি বেশি কিছু বলব না। তবে বেতন কমিশনের প্রথম রিপোর্ট হাতে পেয়ে আমি এই সুপারিশ মেনে নিয়েছি।’ নতুন রিপোর্ট অনুযায়ী, পুরনো পে স্কেল অনুযায়ী ব্যান্ড পে, গ্রেড পে তুলে দেওয়া হচ্ছে। বদলে ডিএ এবং পে কমিশনের সুপারিশ করা অঙ্ক একসঙ্গে জুড়ে নতুন বেতন কাঠামো তৈরি হবে। এরপর হাউস রেন্ট, মেডিক্যাল ভাতার বিষয়টি পরে ভেবে দেখবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন বেতন কমিশনের সুপারিশ মঞ্জুর করতে রাজ্য সরকারের অতিরিক্ত ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে বলেও তিনি জানান।
শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর স্বভাবতই খুশির হাওয়া রাজ্য সরকারি কর্মী মহলে। অনেকেই বলছেন, কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিএ বৃদ্ধি এবং বেতন কমিশন লাগু করার দাবিতে লাগাতার তাঁদের আন্দোলনের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছিলেন, কমিশনের রিপোর্ট হাতে পেলে, রাজ্য সরকারের পক্ষে যতটা সম্ভব, সেই অনুযায়ী কর্মীদের হয়ে মানবিক সিদ্ধান্ত নেবেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, ‘আমি কথা দিয়েছিলাম, কথা রাখব। যে কথা রাখতে পারব না, তা দিই না। আজ রিপোর্ট হাতে পেয়ে আমি অনেক কিছু ঘোষণা করতে পারতাম। কিন্তু তা করছি না।’ এপ্রসঙ্গে তিনি পূর্বতন বাম সরকারের সমালোচনা করে অভিযোগ তুলেছেন যে ২০০৬ সালে আগের বেতন কমিশনের রিপোর্ট জমা পড়ার পরবর্তী ২ বছরেও তা কার্যকর হয়নি।
এদিনের অনুষ্ঠান থেকে পেনশন নিয়েও কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। পেনশনের বদলে যে কনট্রিবিউটারি পেনশন অর্থাৎ কর্মীর জমানো টাকার নির্দিষ্ট হারের সঙ্গে সমহারে কেন্দ্র টাকা দেওয়ার যে নতুন পদ্ধতি শুরু হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা করেন তিনি। বলেন, ‘দেশের মধ্যে বাংলাতেই একমাত্র পেনশন চালু আছে। অনেকে বলেছিল, বন্ধ করে দিন। তাহলে আমার ৫ থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা বাঁচত। কিন্তু আমি কর্মীদের দিকে তাকিয়ে তা করিনি।’ কেন্দ্রের বহু জনবিরোধী নীতির প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ২৩ তারিখ তাঁদের নিয়ে আলোচনার কথা ঘোষণা করেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.