নন্দন দত্ত, সিউড়ি: এনআরসি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ফের কড়া হুঁশিয়ারি তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের। অনলাইনে যেসব সাইবার ক্যাফেতে নাগরিকপঞ্জির ফর্ম পূরণ হবে সেখানকার কম্পিউটার ভেঙে দেওয়া হবে, মাথা নেড়া করে দেওয়া হবে ক্যাফে মালিকের। রবিবার রামপুরহাটের জনসভায় এমনই হুমকি বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির। একইসঙ্গে বাম-কংগ্রেসের ডাকা আগামী সাধারণ ধর্মঘটের বিরোধিতা করতে পালটা পথে নামবে তৃণমূল। রামপুরহাটের জনসভায় তাই পথে নামার নির্দেশ দিলেন অনুব্রত মণ্ডল। এই সভায় আবার বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়ের অনুপস্থিতি নিয়ে একপ্রস্ত সমালোচনা শুরু হয়। বিষয়টিকে অনুব্রত মণ্ডল তেমন গ্রাহ্য না করলেও শতাব্দী কিছুটা আক্ষেপের সুরেই বলেছেন, ”আমি আমন্ত্রণ পাই না, পেলে যেতাম।”
জাতীয় নাগরিকপঞ্জি ও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে রামপুরহাট হাইস্কুল মাঠে সভা করেন অনুব্রত মণ্ডল। সভায় উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল-সহ অনান্যরা। নাগরিকত্ব আইনে যদি অনলাইনে তথ্য সংগ্রহ করা হয়, তাহলে কীভাবে বিরোধিতা করবেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “অনলাইনে ফর্ম পূরণ শুরু হলে মানুষ যে সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে ভরতি করবেন, সেখানকার কম্পিউটারগুলো ভেঙে দেবে। আর যারা করার চেষ্টা করবেন, সেই সমস্ত ক্যাফে মালিকদের মাথার চুল কেটে নেওয়া হবে। তবু নাগরিকত্ব আইনের পথে একধাপও এগোতে দেব না।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাম–কংগ্রেসের ডাকা সাধারণ ধর্মঘট প্রসঙ্গে অনুব্রত বলেন, “ওদের সঙ্গে লোক নেই। ওরা ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে। আমরা ওই রাস্তায় হাঁটব না। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী বনধ, ধর্মঘটের বিরোধিতা করে আসছেন। তাই আমরা পথে নেমে বনধের বিরোধিতা করব”।
কয়েকদিন ধরেই অনুব্রত মণ্ডল জেলার বিভিন্ন ব্লক ঘুরে বেরলেও কোথাও দেখা মেলেনি বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়ের। এমনকী দু’দিন ধরে নলহাটি কিংবা তারাপীঠে থাকলেও লোহাপুর কিংবা রামপুরহাটের সভায় তাঁকে দেখা যায়নি। এনিয়ে অনুব্রত বলেন, “সাংসদ অসুস্থ ছিলেন কিংবা কাজে ব্যস্ত ছিলেন, তাই আসতে পারেননি। তাঁকে সভায় থাকতেই হবে, তার কোনও মানে নেই। ওনার যখন ইচ্ছে হবে, জনসভা করবেন। আমার সভায় কোনও মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ না থাকলেও চলবে। শুধু ব্লক সভাপতি আর অঞ্চল সভাপতিরা থাকলেই হবে।” তবে এ ব্যাপারে শতাব্দীর মন্তব্য, “আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় না। নিমন্ত্রণ না থাকলে কীভাবে যাব। আমি তো রামপুরহাটেই ছিলাম, জানালে যেতাম।”
ছবি: সুশান্ত পাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.