দেবব্রত মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: গঙ্গাসাগরের ভিড় কাড়তে পারে কুম্ভ। প্রথম দিনে সাগরে এসে এমনটাই মনে করছেন কপিলমুনি দর্শনে আসা বহু তীর্থযাত্রী। তবে মাহেন্দ্রক্ষণের এখনও বেশ কয়েকদিন বাকি। রেকর্ড ভিড় হবে সেই সময় এমন আশা প্রশাসনের।
জলপথে নামখানা থেকে পোঁছানো যায় সাগরের চেমাগুড়িতে ও বেণুবনে। অন্যদিকে কাকদ্বীপের লট নম্বর ৮ থেকে মুড়িগঙ্গা পেরিয়ে আসা যায় সাগরে। কিন্তু দুটি নদীপথই শনিবার দেখা গেল কিছুটা হলেও ভিড় কম। তবে এবার পুণ্যস্নান মঙ্গলবার। অন্য বছর হয় ১৪ জানুয়ারি। এবার তিথি অনুযায়ী তা ১৫ জানুযারি। প্রশাসনের আশা, আর সেই সময় ভিড় সাগরতটে আছড়ে পড়বে আগামী কয়েক বছরের মতোই। নিরাপত্তার জন্য এবার সাগরমেলায় মোতায়েন করা হয়েছে ব্যাপক পুলিশ। ৮টি বিশেষ বাহিনী তৈরি রাখা হয়েছে। সাগর, কচুবেড়িয়া, কাকদ্বীপ ও নামখানাতে মোতায়েন করা হয়েছে সেই বাহিনী। রাতদিন পাহারায় ঘুরচ্ছে ড্রোন ও হেলিকপ্টার। আছে ৮০০ সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারি। এবার মেলার নজরদারির জন্য রাখা হয়েছে হিলিয়াম বেলুন। ড্রোন হিলিয়াম ও সিসিটিভি ক্যামেরায় তোলা ছবি মুহূর্তেই পৌঁছে যাচ্ছে মেগা কন্ট্রোল রুমে।
[ আয়ুষ্মান ভারতের কার্ড বিলি ঘিরে ধুন্ধুমার পোস্ট অফিসে ]
এ বছর এক লাফে সরকার অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে সাগরমেলার বাজেট। কুম্ভের মতো পরিষেবা দিতে বিভিন্ন খাতে বাড়ানো হয়েছে অর্থ বরাদ্দ। গঙ্গাসাগর মেলাকে ঘিরে পরিকাঠামোরও উন্নয়ন হয়েছে। এবার বাজেট বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় একশো কোটি। বাড়ানো হয়েছে হয়েছে ড্রেজিংয়ের টাকাও। তা সত্ত্বেও পুরোপুরিভাবে সচল করা গেল না ভেসেল ও লঞ্চ পরিষেবা। কাজের দায়িত্বে ছিল কেন্দ্রীয় আর্ন্তদেশীয় জলপথ পরিবহন সংস্থা। কিন্তু কেন্দ্রীয় সংস্থার ড্রেজার পুরো কাজ শেষ করতে পারেনি। প্রতিটা চ্যানেল তৈরির জন্য যে পরিমান বালি কাটানোর কথা ছিল তা কাটার পর ও ড্রেজিং করা জায়গা পুনরায় বন্ধ হয়ে গেছে। কুয়াশা আর মুড়িগঙ্গার জমে যাওয়া পলিই কিছুটা হলেও ভোগান্তি বাড়িয়েছে পর্যটক থেকে সাধারণ মানুষের।
কাকদ্বীপের এক থেকে পাঁচ নম্বর সমস্ত জেটিই জলের অভাবে বন্ধ থাকছে ভাঁটার সময়। মুড়িগঙ্গার নদীতে বসানো হয়েছে একাধিক নদীর জলের নাব্যতা মাপার যন্ত্র। তা দিয়েও বোঝা যাচ্ছে না মুড়িগঙ্গা স্বাভাবিক হতে কত সময় লাগবে। কুয়াশার কারণে যাতায়াতে কোনও রকম দূর্ঘটনা না ঘটে তা এড়াতে যথেষ্ট সজাগ পুলিশ ও প্রশাসন। রাতে ও কম আলোয় ভেসেলের নেভিগেশন লাইট ও কুয়াশার সময় ভেসেলের ফগ লাইট ব্যাবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতিটি ফেরিঘাটে অতিরিক্ত ভিড় সামাল দিতে প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে ড্রপ গেট। প্রতিটা ড্রপ গেটের দায়িত্বে রাখা হয়েছে পুলিশ অফিসারদের। একটি ড্রপ গেট থেকে তীর্থযাত্রী খালি না হওয়া পর্যন্ত অন্য ড্রপ থেকে ছাড়া হচ্ছে না তীর্থযাত্রীদের। প্রতিটা জেটির গ্যাংওয়ে অথবা পল্টুনের উপর দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না কোন যাত্রীদের। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের অফিসারদের রাখা হয়েছে প্রতিটা জেটিঘাটে। একটি ঘটের সঙ্গে অন্য ঘাটের যোগাযোগ রাখার জন্য অফিসার দের দেওয়া হয়েছে স্যাটেলাইট ফোন। যা থেকে প্রতিনিয়ত বার্তা যাচ্ছে মেলার এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। বিপদ আটকাতে বার বার মাইকিং করা হচ্ছে তীর্থযাত্রীদের উদ্দেশ্যে। বিভিন্ন ভাষায় চলছে প্রচার।
ছবি- পিন্টু প্রধান
[ পড়ুয়া ও শিক্ষিকার সংখ্যা ১! বেহাল দশা শিলিগুড়ির স্কুলের ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.