ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: এখনই বনধ না উঠলেও, শিলিগুড়ির বৈঠকে পাহাড় জট অনেকটাই কাটল। বিনয় তামাংদের সতেরো দফার দাবির অধিকাংশই মেনে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা বনধ প্রত্যাহার করতে হবে। মোর্চাও জানিয়েছে বৈঠক ইতিবাচক। পাহাড়কে সচল করতে আগামী ১৬ অক্টোবর ফের নবান্নে বৈঠকের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এদিনের বৈঠকে একবারের জন্য পৃথক গোর্খাল্যান্ড নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বুঝিয়ে দেন কোনওভাবে রাজ্য ভাগ চলবে না। বাংলা-দার্জিলিং একসঙ্গে থাকবে।
[উত্তরকন্যায় সর্বদল বৈঠকের আগে পাহাড়ে বোমাতঙ্ক]
শিলিগুড়ির উত্তরকন্যার দিকে নজর ছিল সারা রাজ্যের। পাহাড় নিয়ে বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী জানান আগের দিনের মতো আলোচনা সফল। বৈঠক ভাল হয়েছে। পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে স্থায়ী সমাধান চায় রাজ্য। তাঁর সংযোজন, পাহাড়ে বনধ প্রত্যাহার করতে হবে। সরকার চায় বনধ পুরো উঠে যাক। পাহাড়ের দলগুলির দাবি মেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন দার্জিলিংয়ে নাশকতায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হবে। আহত-নিহতদের দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ। পাহাড়ের জট কাটাতে কালীপুজোর পর ১৬ অক্টোবর আরও একটি বৈঠক হবে নবান্নে। তবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এখনই ত্রিপাক্ষিক বৈঠক সম্ভব নয়। সাংবিধানিক দিকগুলি খতিয়ে দেখে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য। পাহাড়ের সরকারি কর্মীদের প্রতি তাঁর বার্তা ১৫ সেপ্টম্বরের মধ্যে কাজে যোগ দিলে, পুজোয় একমাসের অগ্রিম মিলবে। পাশাপাশি তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন পাহাড়ে আন্দোলন তুলে নিলে দাবি মানা হবে। চা বাগানের পরিস্থিতিত স্বাভাবিক করতে রাজ্যের ডাকে ১৪ সেপ্টম্বর ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। বনধের জেরে পাহাড়ের পড়ুয়াদের যাতে অসুবিধা না হয় তার জন্য স্কুলে ভর্তির সময় বাড়ানোর সুপারিশ করবে রাজ্য।
রাজ্যের ডাকা বৈঠকে মোর্চার সাত প্রতিনিধি, বহিষ্কৃত মোর্চা নেতা বিনয় তামাং, জাপ, জিএনএলএফ এবং গোর্খা লিগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বিনয় তামাং দাবি করেন পাহাড়ে পুলিশের গুলি চালনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করতে হবে। পাশাপাশি মোর্চা নেতাদের নাম নতুন ও পুরনো মামলা তুলে নেওয়ার আরজি জানান তিনি। বিনয় আরও জানান চা বাগানের শ্রমিকরা যাতে মজুরি পান তা দেখা হোক। টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার চালু হোক। পাশাপাশি তিনি জানান এই ব্যাপারে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের উদ্যোগ নিক রাজ্য। বৈঠকে থাকা জন আন্দোলন পার্টির নেতা হরকা বাহাদুর ছেত্রী বলেন, এটাই গণতন্ত্রের সাফল্য। আলোচনা চলছে এবং আলোচনা জারি রয়েছে। কথাতেই কাটবে জট। বিশেষজ্ঞরা বলছেন পাহাড় নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালে আরও বেকায়দায় পড়ল বিমল গুরুংয়ের দল। গোর্খাল্যান্ড নিয়ে আলোচনা না হওয়ায় তাদের মুখরক্ষা হল না। বৈঠক শেষে গোর্খা লিগের এক নেতা গোর্খাল্যান্ড নিয়ে কিছু বলতে চাইলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দেন বৈঠকে এই নিয়ে কোনও কথা হয়নি। তবে বনধ তোলার বিষয়ে মোর্চা বিধায়ক অমর সিং রাই জানান এই বিষয় নিয়ে দলে আলোচনা হবে। তবে বিনয় তামাং অবশ্য জানিয়েছেন বনধ তুলে নেওয়ার ব্যাপারে ফের তিনি জনতার কাছে আবেদন জানাবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.