সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: আগুনের গ্রাসে শিল্পাঞ্চলের বনভূমি।পুড়ছে শাল, সেগুন ও মহুয়ার মতো দামি গাছ। কাঠ পাচারকারীদের তাণ্ডবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে দুর্গাপুরের কাঁকসা ব্লকে। দিশেহারা অবস্থা স্থানীয় আদিবাসীদের।
[ কালবৈশাখীর দাপট রাজ্যজুড়ে, বেলা বাড়তেই মিলছে একের পর এক মৃত্যুর খবর]
বিদবিহার, মলানদিঘি ও বনকাঠি। দুর্গাপুরের কাঁকসা ব্লকের এই তিনটি পঞ্চায়েত এলাকার বিস্তীর্ণ অংশে রয়েছে বনাঞ্চল। এর বাইরে বনাঞ্চলের কিছুটা অংশ স্থানীয় গোপালপুর পঞ্চায়েতের অধীনে। গোটা এলাকাটি জঙ্গলমহল নামে পরিচিত। কাঁকসা ব্লকের এই জঙ্গলমহলে বাস করেন কয়েক হাজার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। জঙ্গলের শাল-সেগুন-মহুয়ার মতো গাছের কাঠ কেটেই জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁরা। কিন্তু ইদানিং রাত নামলেই জঙ্গলের শুকনো পাতায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দাবানলের মতো আগুন ছড়িয়ে পড়ছে জঙ্গলের বিভিন্ন প্রান্তে। পুড়ে যাচ্ছে গাছ৷ নষ্ট হচ্ছে কাঠ।
কিন্তু রাতের অন্ধকারে কারা আগুন লাগাচ্ছে জঙ্গলে? স্থানীয় আদিবাসীদের অভিযোগ, কাঁকসার জঙ্গলমহলে কাঠ পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। কিন্তু কাঁচা গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া যেমন বিপজ্জনক, তেমনি বনদপ্তরের নজরদারি এড়ানোও বেশ শক্ত। তাই জঙ্গল কাঠ পাচারের এক অভিনব পদ্ধতি বের করেছেন চোরা কারবারীরা। রাতের অন্ধকারে জঙ্গলে শুকনো পাতায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বছরের এই সময়ে জঙ্গলে শুকনো পাতার অভাব থাকে না। ফলে আগুন ছড়িয়েও পড়ছে দ্রুত। ভোরের দিকে যখন আগুন নিভছে, ততক্ষণে জঙ্গলের একটি অংশের কাঁচা গাছ কার্যত অগ্নিদগ্ধ। সেই সুযোগেই জঙ্গল থেকে সহজেই কাঁচা গাছ ও কাঠ বাইরে পাচার করা দিচ্ছে চোরা কারবারীরা।
দুর্গাপুরের কাঁকসা ব্লকের জঙ্গলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত আদিবাসীরা। রুটি-রুজি হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা। বনাঞ্চলকে বাঁচাতে কমিটি তৈরি করেছেন আদিবাসীরা। কমিটির সদস্য দুখীরাম কিস্কু বলেন, ‘আমরা বনে নজর রাখি। কিন্তু রাতের অন্ধকারে কখন যে শুকনো পাতায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা বোঝা যাচ্ছে না।’ শিল্পাঞ্চলের জঙ্গলমহলের অগ্নিকাণ্ডের সত্যতা স্বীকার করেছে বনদপ্তরও। জঙ্গলে নজরদারি আরও বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন কাঁকসা-শিবপুর বনাঞ্চলের আধিকারিক শুভজিৎ চক্রবর্তী।
ছবি: উদয়ন গুহরায়
[ জালে উঠল ২০০ কেজির শংকর মাছ, দেখতে মেলা ভিড় বাজারে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.