সৌরভ মাঝি, বর্ধমান: দুইজনই সুকুমার সেন। আর তাঁদের নিয়েই গুগল বা উইকিপিডিয়ায় বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। একজন বর্ধমানের ভূমিপুত্র। অন্যজন নন। একজন ভাষাচার্য, প্রফেসর। অন্যজন ছিলেন ভারতের প্রথম মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। কিন্তু দুইজনকে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুলের প্রাক্তনী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে বিভ্রান্ত বহু মানুষ। অনেকেই দুইজনকে একই ব্যক্তি বলে গুলিয়ে ফেলছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা। বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুলের প্রধান শিক্ষকও খোঁজখবর শুরু করেছেন। নথিপত্র ঘাঁটাঘাঁটিও শুরু হয়েছে।
গুগলে আইসিএস সুকুমার সেন সার্চ করলে উইকি-র যে পেজ খুলছে তাতে দেখা যাচ্ছে তিনি বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুলের প্রাক্তনী। এই সুকুমার সেনের জন্ম ১৮৯৮ সালের ২ জানুয়ারি। তাঁর মৃত্যু হয়েছে ১৯৬১ সালে। ২১ মার্চ ১৯৫০ থেকে ১৯ ডিসেম্বর ১৯৫৮ পর্যন্ত ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। প্রথম মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। তাঁর দাদা ছিলেন অশোককুমার সেন। যিনি ব্যারিস্টার ছিলেন। দেশের আইনমন্ত্রীও ছিলেন। কিন্তু আইসিএস সুকুমার সেন বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুলের ছাত্র ছিলেন বলেন উইকিতে উল্লেখ রয়েছে। যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। এই স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ চক্রবর্তী এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে শুরু করেছেন। নিজের ফেসবুক পেজেও পোস্ট করেছেন এই বিষয়ে। কেউ যাতে এই সুকুমারবাবু বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুলের প্রাক্তনী কি না সেই বিষয়ে তথ্য দিতে পারেন। কারও কাছে থাকলে তাঁর কাছে তা জমা দিতে বলেছে তিনি। নিজেও খোঁজ নিতে শুরু করেন। পরে তিনি জানিয়েছেন, তেমন কোনও প্রমাণ মেলার সম্ভাবনা নেই। তিনি জানান, দুইজনই আলাদা ব্যক্তি।
[ আরও পড়ুন: সরাসরি বিজেপিকে ভোট দিতে বলছে কেন্দ্রীয় বাহিনী, অভিযোগ তৃণমূলের ]
ভাষাবিদ সুকুমার সেন পূর্ব বর্ধমান জেলার গোতানের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুলের ছাত্র ছিলেন। যার অকাট্য প্রমাণ রয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালেয়র অধ্যাপক ছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে আইসিএস সুকুমার সেনকে গুলিয়ে ফেলাতেই উইকিতে বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট হয়েছে। আইসিএস সুকুমার সেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্যও ছিলেন। তাঁর নামে বর্ধমান শহরে গোলাপবাগে একটি রাস্তা রয়েছে। আর ভাষাবিদ সুকুমার সেনের নামে একটি সেতুও রয়েছে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক তথা বর্ধমানের বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় এই বিভ্রান্তি দূর করেছেন। তিনি বলেন, “ভাষাবিদ সুকুমার সেন এই জেলার মানুষ। অধ্যাপক ছিলেন। আর আইসিএস সুকুমার সেন অন্যত্র বড় হয়েছেন।” আইসিএস সুকুমার সেনের জীবনের স্কুলজীবন ওড়িশায় কেটেছে বলে একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। নেমসেক। আর তাতেই উইকিতে বিভ্রান্তি হয়েছে আইসিএস সুকুমার সেনের স্কুল হিসেবে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুলের উল্লেখে। যিনি এই তথ্য দিয়েছেন তিনি দুইজনকে একভেবে গুলিয়ে ফেলেছেন।
[ আরও পড়ুন: ভোট দিয়ে নিজের কেন্দ্র বসিরহাটে দিনভর চষে বেড়ালেন তারকা প্রার্থী নুসরত ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.