সৈকত মাইতি, তমলুক: পাঁশকুড়া শহর তৃণমূলের সভানেত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের স্ত্রী সুমনা মহাপাত্র। সুমনাদেবীর ইস্তফা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে।
পাঁশকুড়া পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন সুমনা মহাপাত্র। সেইসঙ্গে আবার পাঁশকুড়া শহরের তৃণমূলের সভানেত্রী পদেও ছিলেন। যদিও ইতিমধ্যেই রাজ্যের তিনবারের মন্ত্রী স্বামী সৌমেন মহাপাত্রকে মন্ত্রিত্ব থেকে শুরু করে জেলা সভাপতি পদ-সহ একাধিক পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে দল। তবে তিনি বর্তমানে তমলুকের বিধায়ক পদে রয়েছেন। এমন অবস্থায় গত আগস্ট মাসে আর জি কর কাণ্ডে চিকিৎসক ছেলে বোধিসত্ব মহাপাত্রের নামে সোশাল মিডিয়া জুড়ে অপপ্রচারকে কেন্দ্র করে দলের একাংশের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় সস্ত্রীক সৌমেন মহাপাত্রকে। আর এবার আচমকাই সুমনাদেবীর দলীয় পদ থেকে এই পদত্যাগ ঘিরে রীতিমতো গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
যদিও এই পদত্যাগ প্রসঙ্গে সুমনাদেবীর দাবি, আর জি কর কাণ্ডের সময় তিনি তাঁর এই সাংগঠনিক পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করে অব্যাহতি চেয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সুমনা মহাপাত্র বলেন, “আমি আমার পদত্যাগের বার্তা চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলাম শীর্ষ নেতৃত্বকে। তবে প্রকাশ্যে দলীয় কর্মীদের কাছে অবশ্য তখন কিছু জানানো হয়নি। ভেবেছিলাম রাজ্যের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জানানো হবে। তাই রাজ্যের এই চুপ থাকাটা আমি সম্মতির লক্ষ্মণ হিসেবে ধরে নিয়েই এবার প্রকাশ্যেই পদত্যাগের কাথা জানালাম। মৌখিকভাবে তৃণমূলের বর্তমান জেলা সভাপতিকেও বিষয়টি জানিয়েছি। তবে পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও একজন সাধারণ তৃণমূলের কর্মী হিসেবেই থাকতে চাই।” তিনি আরও বলেন, “ব্যক্তিগত জীবনেও ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ব্যস্ত থাকার কারণে আমি দলীয় পদ থেকে সরে দাঁড়াতে চাই।”
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাকে ফোন মারফত সুমনা মহাপাত্র তঁার ব্যস্ততা থাকার কারণে এই পদত্যাগের বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে এর সঙ্গে অন্য কোনও সমীকরণ নেই।” বিজেপির তমলুক সংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডল বলেন, “তৃণমূলে বহু আগেই ভাঙন ধরেছে। রুচিশীল মানুষজন যে আর কোনও ভাবেই তৃণমূলে থাকতে রাজি নন তা আরও একবার পরিষ্কার হল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.