Advertisement
Advertisement
Canning

‘তালিবানি’ অত্যাচার! পরকীয়া সন্দেহে জোর করে বিয়ে, বিধবার চুল কেটে গ্রামছাড়া করার অভিযোগ

ভাসুরের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এই 'শাস্তি', অভিযোগ অসহায় গৃহবধূর।

Widow in Canning tortured by neighbours and rleatives by cutting hair after, none arrested | Sangbad Pratidin

ছবি: প্রতীকী

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:July 30, 2021 3:42 pm
  • Updated:July 30, 2021 3:42 pm  

দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: ফের সামাজিক নির্যাতনের শিকার ক্যানিংয়ের (Canning) বিধবা। স্বামীকে হারিয়ে অসহায় মহিলার পাশে দাঁড়ানো দেওরের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেওয়ার পর মারধর করে গ্রামছাড়া করা হল। ‘তালিবানি’ (Taliban) কায়দায় এমনই নির্যাতনের অভিযোগ উঠল গৃহবধূর আত্মীয়, প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, বেধড়ক মারধর করে তাঁকে শাখা-সিঁদুর পরিয়ে জোর করে ওই যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর তারপর মহিলা ও যুবককে গ্রামছাড়া করতে জোর করে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে মুচলেকা। এমন‌কী মহিলার মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। ক্যানিং থানার নিকারিঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাবু গ্রামে। নির্যাতিতা গৃহবধূ ইতিমধ্যে ক্যানিং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত শুরু করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ। 

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, প্রায় তিন বছর আগে মৃত্যু হয় ওই মহিলার স্বামীর। তারপর থেকে ওই বিধবা (Widow) মহিলা দুই সন্তানকে নিয়ে অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছিলেন। অভিযোগ, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই ওই গৃহবধূর ভাসুর পরিতোষ সর্দার ও প্রতিবেশী কয়েকজন যুবক প্রতিনিয়ত তাঁকে কুপ্রস্তাব দেয়। তাতে রাজি হননি তিনি। তার জেরে তাঁকে গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এই অবস্থায় অসহায় গৃহবধূর এক দেওর ক্ষুদিরাম সর্দার অসহায় পরিবারের পাশে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: বিপদ এড়াতে মেইন সুইচ বন্ধ করতে গিয়ে অঘটন! বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই হাওড়ায় মৃত্যু যুবকের]

তাতেই ঘটে বিপত্তি। শুক্রবার ওই মহিলা জানান, ”আমাদের বাড়িতে কোনও ফোন না থাকায় বৃহস্পতিবার আমার মা ক্ষুদিরামকে ফোন করে। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যেও ভাঙা বাড়িতে আমরা কেমন আছি, তা জানার জন্য মায়ের এই ফোন। সেইমতো ক্ষুদিরাম নিজের ফোন নিয়ে আমার বাড়িতে আসে। আর তখনই স্থানীয় দশ, বারো জন যুবক চড়াও হয় আমাদের বাড়িতে। আচমকাই মারধর করতে থাকে, অশ্লীল ভাষায়  গালাগালি দেওয়ার পাশাপাশি রটিয়ে দেয়, ক্ষুদিরামের সঙ্গে আমার অবৈধ সম্পর্ক আছে।” বেধড়ক মারধর করা হয় ক্ষুদিরামকে।

আচমকা কেন তাঁদের উপর ‘তালিবানি’ কায়দায় এই অত্যাচার নেমে এল? গৃহবধূর দাবি, ”ভাসুর দীর্ঘদিন ধরেই আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার সেই কুপ্রস্তাবে আমি রাজি হইনি। তাই এদিন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাদের মারধর করে বাড়িছাড়া করল।” এরপর দু’জনকে জোরপূর্বক বিয়ে দিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁদের। অভিযোগ, ওই মহিলাকে প্রকাশ্য রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধরের পর ব্লেড দিয়ে তাঁর চুল কেটে দেওয়া হয়। পাশাপাশি এসব ঘটনার ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েও দেওয়া হয়।

[আরও পড়ুন: ভিন রাজ্যে বেড়াতে যাওয়ার নাম করে মোটা টাকায় কিশোরীকে ‘বিক্রি’, গ্রেপ্তার মহিলা]

প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কায় নির্যাতিতা সেখান থেকে কোনওরকমে পালিয়ে রাতে ক্যানিং স্টেশনে রাত কাটায়। পরে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করান ওই বিধবা মহিলা এবং ক্ষুদিরাম সরদার। ইতিমধ্যেই ক্যানিং থানায় পরিতোষ সর্দার, অনিমা সর্দার, মরুনি সর্দার, বাপি সর্দার, অনিতা সর্দার, শ্যাম নস্কর, সাগর নস্কর, দিলীপ সর্দারদের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই নির্যাতিতা। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নিরাপদে বাড়িতে থাকতে পারেন সেই আবেদন জানিয়েছেন নির্যাতিতা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement