Advertisement
Advertisement

Breaking News

'দিদিকে বলো'তে মুশকিল আসান

মুড়ি ভেজে ভাত জোটানোর দিন শেষ, ‘দিদিকে বলো’র হাত ধরে এবার মিলবে বিধবা ভাতা

আগামী বছরের মধ্যে গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ঘরও পাবেন তিনি।

Widow gets government allowance by contacting 'Didike Bolo'
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:December 27, 2019 9:21 pm
  • Updated:December 27, 2019 9:21 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ছিল ভাঙা ঘর। মুড়ি ভেজে কোনওক্রমে চলত পেট। রাজ্য সরকারের তরফে বিধবা ভাতার সুবিধা থাকলেও, তা থেকে শতহস্ত দূরে থেকেই দিন কাটত কষ্টে। কিন্তু এবার এই যন্ত্রণা শেষ। ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করে বিধবা ভাতা প্রাপকের তালিকায় নাম উঠল পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের বাসিন্দা কবিতা সূত্রধরের। কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ফি মাসে ভাতার ৭৫০ টাকা করে জমা হয়ে যাবে বলে আশ্বস্ত করেছে ব্লক প্রশাসন।

পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ১ নং ব্লকের নতুনডি গ্রাম পঞ্চায়েতের দুরমুট গ্রামের বাসিন্দা কবিতা সূত্রধর। বয়স ৪২। গত ডিসেম্বরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন স্বামী। প্রতিমা গড়ে সংসার চালাতেন তিনি। কিন্তু মৃত্যুর পর সংসারে প্রবল আর্থিক কষ্ট দেখা দেয়। ফলে দুই ছেলের সংসারে কবিতাদেবী শুরু করেন মুড়ি ভাজার কাজ। সেইসঙ্গে বাবার ফেলে যাওয়া মাটির কাজে হাত লাগান তাঁর বড় ছেলে তুলসী। কিন্তু অভাব ঘোচেনি পরিবারের। মা যাতে বিধবা ভাতা পান, সেজন্য ছেলে বারবার ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু সুরাহা মেলেনি।

[আরও পড়ুন: শিলাবৃষ্টিতে বাড়ল শৈত্যের কামড়, হিমচাদরে মোড়া দার্জিলিংয়ের রূপে মুগ্ধ পর্যটকরা]

এরপর কবিতা দেবীর ছেলে তুলসী সূত্রধর এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে ‘দিদিকে বলো’ ফোন নম্বর পেয়ে সেখানে ফোন করে মায়ের বিধবা ভাতা চালুর জন্য আবেদন জানান। সেইসঙ্গে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার আবেদনও জানান। তারপর ‘দিদিকে বলো’–র কাজে যুক্ত প্রশান্ত কিশোরের টিম তুলসীকে ফোন করে নানা তথ্য সংগ্রহ করে। রঘুনাথপুর ১ নং ব্লক প্রশাসনের কর্মীরা কবিতাদেবীর বাড়ি গিয়ে বিধবা ভাতা চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে আসেন। এর কিছুদিনের মধ্যেই ব্লক প্রশাসনের তরফে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে বিধবা ভাতার তালিকায় তাঁর নাম উঠে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই ভাতার টাকা মিলবে। বিডিও অনির্বাণ মণ্ডল বলেন, “বিধবা ভাতার তালিকায় ওই মহিলার নাম উঠে গিয়েছে। গীতাঞ্জলি প্রকল্পের অর্থ এলে ওই প্রকল্পে বাড়ির সুবিধাও পাবেন কবিতা দেবী।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: নববর্ষের শুভেচ্ছা ব্যানারে CAA বিরোধিতা, দুর্গাপুর নগর নিগমের কাজে বিতর্ক]

সমাজকল্যাণ দপ্তরের অধীনে থাকা এই প্রকল্পে আশি বছরের নিচে বিধবা মহিলার বয়স হলে প্রতি মাসে ৭৫০ টাকা ভাতা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। আশির উপরে বয়স হলে মিলবে ১০০০ টাকা। সেইমতো কবিতাদেবীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৭৫০ টাকা করে জমা হবে প্রত্যেক মাসে। তাঁদের জীবনযাপন আর ততটা কষ্টের থাকবে না বলেই আশা কবিতা সূত্রধরের। ছেলে তুলসী সূত্রধরের কথায়, “দিদিকে বলো-তে ফোন করেই এই কাজ হল। খুবই ভাল লাগছে। এই মোবাইল নম্বর আক্ষরিক অর্থে মুশকিল আসান।” তবে শুধু বিধবা ভাতা তালিকায় নাম ওঠাই নয়, ২০২০ সালের মধ্যে আবাস প্রকল্পের সুবিধাও তিনি পাবেন বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। মুড়ি ভেজে ভাত জোগাড় করা, ভাঙা ঘরের বাসিন্দা কবিতাদেবী তাই এখন অনেকটাই নিশ্চিন্ত।

ছবি: সুনীতা সিং।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement