সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: দিলীপ ঘোষ মানেই বিতর্ক। দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) মানেই কথায় কথায় ‘রগড়ে’ দেওয়া। চাঁচাছোলা ভাষায় বিরোধীদের আক্রমণ। অথচ এই দিলীপ ঘোষই নাকি ছেলেবেলায় লাজুক ছিলেন! মজে থাকতেন খেলাধুলোয়। মাঠে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে ‘টিম গেমে’ অসাধারণ পারদর্শী ছিলেন তিনি। শুধু কি তাই! ছোট থেকেই কারওর অন্যায় কথাবার্তা একেবারেই মানতে পারতেন না। বরং মুখে মুখে ঠোঁটকাটা জবাব দিতেই পছন্দ করত কিশোর দিলীপ। কিশোরবেলায় কি মনে বসন্তের রং লেগেছিল বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতিরও? প্রেমে পড়েছিলেন? তবে বিয়েটা করা হয়নি। কেন বিয়ে করেননি? সেই গল্পই সংবাদ প্রতিদিন ডট ইনকে শোনালেন বিজেপির বিদায়ী সাংসদ দিলীপ ঘোষের মা পুষ্পলতা ঘোষ ও ছোটভাই হীরক ঘোষ।
দিলীপ ঘোষের জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা তৎকালীন পশ্চিম মেদিনীপুরের অন্তর্গত ঝাড়গ্রামে। ছেলেবেলার অধিকাংশ সময়টাই তিনি কাটাতেন মাঠে। ক্রিকেটের রমরমা তখন হয়নি। ফলে ফুটবল, ভলিবল, কবাডি, হাডু ডু-সব খেলাতেই সমান পারদর্শী ছিলেন তিনি। একা নয়, ভাইদের হাত ধরেও মাঠে নিয়ে যেতেন। দিনের বেশিরভাগ সময়টা কেটে যেত মাঠেই। এর মাঝে আর প্রেমে পড়া হয়নি তাঁর। গ্রামের কোনও কিশোরী তাঁর মনে দোলা দিতে পারেনি। দিলীপবাবুর মা বলছেন, “কোনও মেয়ের সঙ্গে কথাই বলত না। প্রেম-ভালোবাসা হবে কী করে!” তাহলে বিয়ে করলেন না কেন? বাড়ি থেকে বিয়ের চাপ দেননি ছেলেকে?
উত্তরে পুষ্পদেবী বলছেন, “আরএসএসে চলে গেল ছেলে। ওখানে তো কেউ বিয়ে করেনি। তার পর থেকে বাড়িতেও আসত না।” বাড়িতে না এলেও নিয়মিত মায়ের ওষুধ পাঠাতে ভোলেন না বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। শত ব্যস্ততার মাঝেও ফোন করে জেনে নেন মা ওষুধ পেয়েছেন কিনা। ওষুধ খাচ্ছেন কিনা। তবে ফোনে এক মিনিটের বেশি কথা বলতে পছন্দ করেন না। কারণ বাকি সময়টা তো রাজনৈতিক ‘খেলা’ খেলতে ভালোবাসেন দিলীপ ঘোষ। আজ থেকে নয়, তিনি খেলতে ভালোবাসেন ছোট থেকেই। তাঁর ভাই হীরকবাবু বলছেন, “মেজদা আমাদের সকলকে নিয়ে মাঠে যেতেন। সবাইকে নিয়ে খেলাধুলো করতেন। তখন ক্রিকেটের চল ছিল না। বাকি সব খেলা খেলতাম।”
এবার লোকসভা ভোটে দিলীপের ‘খেলা’টা কি কঠিন হল? পরিবারের সদস্যরা বলছেন, কঠিন কীসের! জেলা সভাপতি থাকাকালীন সব জায়গাতেই গেছেন দিলীপ। তাই কোনও সমস্যাই হবে না। এদিন বিজেপির প্রার্থীও ঠিক সেই কথাটাই বলেছেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে আসা ‘লাজুক’ ছেলেটাই আজ বলছেন, “বাংলাজুড়ে দাদাগিরি একজনই করতে পারেন, সেটা দিলীপ ঘোষ।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.