বিক্রম রায়, কোচবিহার: ‘গদ্দার’ কে? কোচবিহার লোকসভা আসনে ভরাডুবির পর এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে। জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ভোট গণনার আগে ‘গদ্দার’কে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। সেই ‘গদ্দার’কে দল থেকে তাড়ানোর কথাও তিনি জানিয়েছিলেন। তবে জেলা সভাপতি সরাসরি কারও নাম উল্লেখ না করলেও তাঁর ইঙ্গিত যে, যুব সংগঠনের জেলা সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতীম রায় ও তাঁর অনুগামীদের দিকেই ছিল, সে ব্যাপারে নিশ্চিত জেলার রাজনৈতিক মহল।
[আরও পড়ুন: গেরুয়া ঝড়ে খাস কলকাতাতেই কুপোকাত তৃণমূলের মন্ত্রী-বিধায়করা]
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতীম রায় জানান, কেন এত উন্নয়ন করা সত্ত্বেও এই ফল হল, তা পর্যালোচনা করা উচিত। তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক ডেকেছেন। তিনিও সেই বৈঠকে থাকবেন। পর্যালোচনা বৈঠক না করে কারও উপর দোষারোপ করা ঠিক হবে না। কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদের আরও বক্তব্য, “আমাদের নিশ্চয়ই ভুল হয়েছে। তবে যে যত বড় পদে রয়েছেন, তাঁর তত বড় ভুল হয়েছে।’ তবে তিনি জেলা সভাপতির ‘গদ্দার’ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এদিকে ভোটে তৃণমূল প্রার্থীর হারের পর থেকে জেলা জুড়ে কার্যত ভেঙে পড়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সভাপতি পদে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, দলনেত্রী রবিবাবুকে অসীম ক্ষমতা দিয়েছিলেন। তাই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে তাঁর অনুগামীদেরই বসানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও এই ধরনের ফল কখনওই কাম্য ছিল না। তবে দলে ‘গদ্দার’ বলতে কাকে বোঝাতে চাইছেন এবং সমীক্ষায় কাদের নাম চিহ্নিত করেছেন, তা নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি রবিবাবু। রাজনৈতিক মহলের মতে, দলের অন্তর্ঘাত যে চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা এই ফলাফলেই স্পষ্ট। নাহলে এভাবে কোচবিহার লোকসভা আসন হাতছাড়া হত না ঘাসফুল শিবিরের। খাতায় কলমে কোচবিহারে তৃণমূলের সংগঠন অত্যন্ত শক্তিশালী। সেক্ষেত্রে লোকসভা ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়াতে শাসকদল কী পদক্ষেপ করে, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.