ফাইল ছবি
সম্যক খান, মেদিনীপুর: সাত সন্তানের জননী। নতুন বছরের শুরুতে এক কন্যাসন্তানের (Baby girl)জন্ম দিয়ে অষ্টমবার মা হয়েছেন। কিন্তু এত সন্তানকে বড় করবেন কীভাবে? সাতপাঁচ ভেবে তাই শেষ কন্যাকে বিক্রি করার পরিকল্পনা করেন মা। সেইমতো চুপিসাড়ে ১০ দিনের সন্তানকে একজনের হাতে তুলেও দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিবেশীদের সংশয়ে শেষরক্ষা আর হল না। জানাজানি হতেই থানা, পুলিশ, শিশু সুরক্ষা দপ্তরের (Child Protection) তদন্ত শুরু এবং উদ্ধার শিশুকন্যা। যদিও এত কিছুর পরও মায়ের দাবি, বিক্রি নয়, মেয়ে যাতে ভালোভাবে মানুষ হয়, পড়াশোনা শেখে, তাই দাদার কাছে তাকে দান করা হয়েছিল। পরে নিজের কাছে ফিরিয়ে আনতেন। মায়ের এই কীর্তিতে দিনভর শোরগোল মেদিনীপুর (West Midnapore) সদরের ফুলপাহাড়ি এলাকা।
ফুলপাহাড়িতে ভাড়া থাকেন শিবানী সিং ও অমর দাস। শিবানী বাড়ি বাড়ি কাজ করেন। আর অমর পেশায় শ্রমিক। তাঁদের ৭ সন্তান। যার মধ্যে এক ছেলে, ৬ মেয়ে। গত মাসের ১৭ তারিখ আরেক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শিবানী। ২৭ তারিখ পর্যন্ত তাঁর মেয়েকে দেখেছেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু তার পর থেকে আর দেখতে পাননি। তাতেই সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। শিবানীকে শিশুকন্যার কথা জিজ্ঞাসা করায় তিনি জানান, মেয়ে দাদার বাড়িতে আছে। কিন্তু তাতেও সন্দেহ কাটেনি। পরে বার বার মেয়ের কথা জানতে চান তাঁরা। তাতেই চাপে পড়ে শিবানী জানান, মেয়েকে মানুষ করার জন্য তিনি দাদাকে দিয়ে দিয়েছেন। মেয়ে এখন আরামবাগে (Arambag) রয়েছে।
এর পর প্রতিবেশীরা গুড়গুড়িপাল থানায় খবর দেয়। পুলিশ শিশু সুরক্ষা দপ্তরের সাহায্যে তদন্ত শুরু করে। খুঁজতে খুঁজতে শালবনির গোদামৌলি থেকে উদ্ধার হয় শিশুকন্যা। তার মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়েছে, সরকারি হোমে পাঠানো হয়েছে তাকে। পুলিশি জেরায় অবশ্য মা শিবানী জানিয়েছেন, মেয়েকে বিক্রি করেননি। ভালোভাবে মানুষ করার জন্য তিনি দাদাকে দান করেছিলেন। যদিও পুলিশের দাবি, মোটেই সত্যি কথা বলছেন না শিবানী। অষ্টম সন্তানকে তিনি বিক্রিই করেছিলেন। জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান সন্দীপবাবু জানান, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.