অভিষেক চৌধুরী, কালনা: বন্ধুদের সঙ্গে গুজরাটের মোরবির মচ্ছু নদীর উপরের কেবল ব্রিজ দেখতে গিয়েছিলেন। আনন্দ করে ফিরে আসারই পরিকল্পনা ছিল। যাওয়ার সময়েও কেউ ভাবেননি এমন বিপদ আসতে চলেছে তা ক্ষুণাক্ষরেও টের পাননি কেউ। তবে বাস্তবে ঘটল তাই। ব্রিজ বিপর্যয়ে প্রাণ গেল বাংলার যুবকের।
নিহত হাবিবুল শেখ, পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী দু’নম্বর ব্লকের মুকসিমপাড়া পঞ্চায়েত কেশববাটি এলাকার বাসিন্দা। ছোট থেকে বেশ মেধাবী। পড়াশোনায় ভালই ছিলেন হাবিবুল। তবে অভাব প্রতি মুহূর্তে স্বপ্নপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তো মেধাবী ছাত্র হাবিবুলকে একাদশ শ্রেণির পরই পড়াশোনায় ইতি টানতে হয়। চাষবাস করে যা আয় হবে, তাতে সংসারের খরচ সামাল দিতে কালঘাম ছুটেছে বাবার। তাই নিজে আর সে পথে এগোননি। পরিবর্তে সোনার কাজ করার জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন গুজরাটে।
দশ মাস আগে গুজরাটে কাকার কাছে চলে যান হাবিবুল। সোনার কাজ করছিলেন। যা আয় হত সে টাকা ঘরে পাঠাতেন। সবে পরিবারে সুদিন ফিরছিল। দিব্যি চলছিল সংসার। একটু একটু করে পরিবারের লোকজনের দুঃখ দুর্দশা ঘোচানোর কাজ করছিলেন হাবিবুল। কিন্তু সুখ যে বড় ক্ষণস্থায়ী। রবিবার ছুটি ছিল। বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন গুজরাটের মোরবির মচ্ছু নদীর উপরের কেবল ব্রিজে। আর তখনই ভেঙে পড়ে সেতু। আর পাঁচজনের মতো মচ্ছু নদীতে তলিয়ে যান হাবিবুল। বেশ কিছুক্ষণ নিখোঁজ থাকার পর উদ্ধার হয় হাবিবুলের নিথর দেহ। তাঁর কাকাই বাড়িতে ফোন করে দুঃসংবাদ জানান।
মৃতের বাবা মহিবুল শেখ বলেন, “ছেলে সোনার কাজের জন্য গুজরাটে গিয়েছিল। সেখানেই কাকার কাছে থাকত। রবিবার বন্ধুদের সঙ্গে কেবল ব্রিজ দেখতে গিয়েছিল। তারপরেই জানতে পারলাম ও আর নেই।” ছেলের মৃত্যুসংবাদের মতো কঠিন বাস্তব যেন মানতেই পারছেন না হাবিবুলের বাবা। চোখের জল বাঁধ মানছে না তাঁর। পরিবারের অন্যান্যদের অবস্থাও প্রায় একইরকম। নিজেদের সামলাতে পারছেন না তাঁরাও। আপাতত দেহ গ্রামে ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন কেশববাটির বাসিন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.