সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: DA পেলে তবেই স্কুলে আসবেন। শুক্রবার সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ধর্মঘটকে (Strike) সমর্থন জানিয়ে স্কুলে অনুপস্থিত থাকায় শনিবার এই কথা বলেই শিক্ষকদের ঢুকতে বাধা দিলেন অভিভাবকরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Midnapore) কেশিয়াড়ির কুলবনি স্কুলের অভিভাবকদের এই বিক্ষোভের জেরে শিক্ষকদের ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হল মাঠে। মাত্র ৬ জন শিক্ষক ঢুকতে পারলেন ক্লাসে। ডিএ ধর্মঘট সমর্থন করে যে ১৮ জন গরহাজির ছিলেন শুক্রবার, তাঁদের ‘শাস্তি’ পেতে হল। প্রায় একই পরিস্থিতি কাঁথি, বর্ধমানেও।
শুক্রবার সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ডাকা ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে কেশিয়াড়ির কুলবনি স্কুলের ১৮ জন শিক্ষক অনুপস্থিত ছিলেন। আর শনিবার সকালে স্কুল খুলতেই সেই শিক্ষকদের (Teachers) স্কুলে ঢুকতে বাধা দিলেন অভিভাবকদের ও এলাকাবাসীরা। অভিভাবকরা শিক্ষকদের কাছে জানতে চান, শুক্রবার তাঁরা কেন স্কুলে আসেননি? শিক্ষকরা জানান, DA-সহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে ধর্মঘট ছিল, তাই আসেননি। তখনই অভিভাবকরা পালটা জানান, ”তাহলে DA পেলে স্কুলে আসবেন।” শনিবারও তাঁরা স্কুলে ঢুকতে পারলেন না।
এদিকে, কাঁথিতেও (Kanthi)সরকারি ফতোয়া উড়িয়ে শুক্রবার সরকারি কর্মচারীদের ডাকা একদিনের ধর্মঘটে শামিল হওয়ায় এবার ‘বহিরাগত’দের রক্তচক্ষুর কোপে পড়লেন রামনগর ১ ব্লকের খাদালগোবরা জুনিয়ার বেসিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অভিযোগ, শিক্ষকদের প্যান্ট খুলে রোদে দাঁড় করিয়ে রাখার নিদান দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের স্কুলের বাইরে দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছাড়িয়েছে সৈকত শহর দিঘা এলাকায়। শিক্ষকদের দাবি, ধর্মঘট সফল হওয়ায় প্রতিহিংসার পথে নেমে শনিবার ‘বহিরাগত’দের লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়৷ তবে ১১টা ৪০ মিনিটের পর অভিভাবকরা গিয়ে বহিরাগতদের স্কুল খুলতে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদ করায় তাঁরা পিছু হটে বলে দাবি শিক্ষকদের।
জানা গিয়েছে, স্কুলের মোট ৬জন শিক্ষক রয়েছেন। তার মধ্যে ৫ জনই ডিএ-র দাবিতে ধর্মঘটে শামিল হয়ে স্কুল আসেননি শুক্রবার। ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যাওয়ায় ওই একজনই ক্লাস নিয়েছেন। এরপর শনিবার সকালে স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা এসে পৌঁছলে তাঁদের স্কুল খুলতে বাধা দেওয়ায় হয় বহিরাগতদের পক্ষ থেকে। এমনকী শিক্ষিকাদের বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন বহিরাগতরা। এর ফলে দীর্ঘক্ষণ ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের বাইরে রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয় বলেও উঠেছে অভিযোগ। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুক আলি খান বলেন, ”আমরা ধর্মঘটে সামিল হওয়ার জন্যে স্কুলে আসবো না বলেই আগেই সার্কেল ইন্সপেক্টর কে ইমেলের মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়েছি। একজন শিক্ষক এসে ক্লাস করেছেন। ৫ জন ছাত্রছাত্রী স্কুলে এসেছিল। তাদের পুরো ক্লাস নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছু বহিরাগত মানুষ যারা অভিভাবক নন তারা এদিন স্কুলে এসে মারমুখী আচরণ করেন। স্কুল খুলতে বাধা দেন।”
বর্ধমানের (Burdwan) দেওয়ানদিঘির নরেন্দ্রনাথ প্রাথমিক বিদ্যালয়েও একই পরিস্থিতি। সকালে পড়ুয়ারা স্কুলে গিয়ে দেখেন, তালা বন্ধ। এই স্কুলে ২৫০ জন পড়ুয়া। শুক্রবার স্কুলের শিক্ষকরা ধর্মঘটে শামিল হবেন বলে ছুটি দিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর শনিবার স্কুলে গেলে তাঁদের ঢুকতে বাধা দিয়ে তালা আটকে রাখেন অভিভাবকরা। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর গাছতলায় দাঁড়িয়েই ছাত্রছাত্রীদের একপ্রস্ত পড়ান শিক্ষক সুব্রত সেন। কিন্তু এদিন আর অন্যান্য ক্লাসই হল না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.