দীপঙ্কর মণ্ডল: বর্ধিত করোনা পরিস্থিতিতে দিল্লির (Delhi) সরকার যেখানে গোটা দেশে স্নাতক–স্নাতকোত্তরে চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নিতে অনড়। সেখানে ফের মানবিক মুখ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। বর্তমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা বাতিল করে মারণ ভাইরাস থেকে ছাত্র–ছাত্রীদের বাঁচাতে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার। শুক্রবার নবান্নের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, পলিটেকনিকে ভরতির প্রবেশিকা পরীক্ষা এবছর নেওয়া হবে না। পরিবর্তে শুধুমাত্র মাধ্যমিক (Madhyamik Exam) পরীক্ষায় পাওয়া নম্বরের ভিত্তিতেই অনলাইনে কলেজে ভরতি হতে পারবে ছাত্রছাত্রীরা। যারা আগেই আবেদন করেছে তাদের নতুন করে আর আবেদন করতে হবে না। www.webscte.co.in ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা পলিটেকনিকে ভরতির আবেদন করতে পারবে।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স এক্সামিনেশন ফর পলিটেকনিকস (JEXPO) হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল। ২ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত অনলাইন এবং অফলাইনে আবেদনপত্রও নেওয়া হয়। এই প্রবেশিকা পরীক্ষায় ৫০ নম্বরের অঙ্ক, ২৫ নম্বরের পদার্থবিদ্যা এবং ২৫ নম্বরের রসায়নের উপর পরীক্ষা নেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অসম, ত্রিপুরা, বিহার, ঝাড়খন্ড ও ওড়িশা থেকেও প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী আবেদন করে। মাধ্যমিক বা সমতুল্য পরীক্ষায় ৩৫% নম্বর থাকলেই জেক্সপোয় বসার আবেদন করা যায়। ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনোলজি, আর্কিটেকচার ও ফার্মেসিতে ডিপ্লোমা পড়ার সুযোগ মেলে জেক্সপো-র মাধ্যমে। বলাই বাহুল্য লক্ষ লক্ষ ছাত্র ছাত্রীর কাছে প্রত্যেক বছর এই পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ রাজ্য ও প্রতিবেশী রাজ্যগুলো মিলিয়ে লক্ষ লক্ষ আবেদনপত্র জমা পড়ে। যদিও এবার তা কমে মাত্র ৬০ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছিল কারিগরি ভবনে। প্রত্যেকের কাছে পরীক্ষায় বসার ফি হিসাবে ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জয়েন্ট এন্ট্রান্স এবং ভোকলেট বাতিল হলেও আবার নতুন করে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হবে। কারিগরি শিক্ষা দপ্তর আশা করছে পলিটেকনিকে (Polytechnic) ভরতির জন্য এবার মাধ্যমিকে পাশ করা ছাত্র-ছাত্রীদের একটি বড় অংশ আবেদন জানাবে।
জেক্সপোর দায়িত্বে থাকে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল অফ টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল এডুকেশন অ্যান্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট।’ ‘ইউনাইটেড ওয়েস্ট বেঙ্গল পলিটেকনিক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন এই পরিস্থিতিতে উদ্ভূত সমস্যার কারণে জয়েন্ট এন্ট্রান্স না নেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিতে স্টেট কাউন্সিলকে চিঠি দিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। চিঠির বক্তব্য, ‘‘দীর্ঘ লকডাউন এবং আমফানের ফলে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষ বিপর্যস্ত। অনেকে কাজ হারিয়েছেন। অনেকের বেতন কমে গিয়েছে। ছোট দোকানদার এবং গরিব কৃষকের অবস্থা শোচনীয়। এই পরিস্থিতিতে যাদের থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে তা ফেরত দেওয়া হোক।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.