সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মালদহ বরাবরই তাঁকে হতাশ করেছে। রাজ্য রাজনীতিতে প্রয়াত প্রাক্তন রেলমন্ত্রী গণিখানের গড় হিসেবে পরিচিত এই জেলায় এখনও সেভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি রাজ্যের শাসক দল। ২০১১ বিধানসভায় মালদহে কংগ্রেসের (Congress) সঙ্গে জোটের সুবাদে একটি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। ষোলোর বিধানসভায় সেটাও জোটেনি। সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা নির্বাচনেও দুটি আসনের দুটিই গিয়েছে বিরোধী শিবিরে। স্বাভাবিকভাবেই হতাশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মালদহের জনসভায় তাই তাঁর মুখে শোনা গেল আক্ষেপের সুর। বললেন, “মালদহে কি আমরা কিছু পাব না? ৩০ বছর ধরে মালদহে আসছি। ভোটের আগে সব সমীকরণ পালটে যায়। দুঃখ হয়, মালদহে আমাকে শূন্য হাতে ফেরালে।”
মুখ্যমন্ত্রীর আক্ষেপ, “২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে মালদহের একটা সিটে বিজেপি (BJP) জিতেছে, একটা সিটে কংগ্রেস জিতেছে। এমনকী মৌসমকে (Mausam Noor) পর্যন্ত হারিয়ে দিয়েছে। ওঁর বিরুদ্ধে নানা রকম অপপ্রচার করেছে। তাই আমরা ওঁকে রাজ্যসভার প্রার্থী করে দিয়েছি। মালদহে আমার সিট নেই বলে আমি ব্যবস্থা করে দিয়েছি।” তবে আক্ষেপের মাঝেও প্রত্যয়ী মুখ্যমন্ত্রী। বলে দিচ্ছেন,”এবারে কিন্তু শূন্য হাতে ফিরব না। আপনাদের আশীর্বাদ, দোয়া সঙ্গে নিয়েই যাব।” আসলে ২০১৯-এর লোকসভায় দেখা গিয়েছে কংগ্রেস-তৃণমূলের ভোট ভাগাভাগির অঙ্কে মালদহের একটি আসন দখল করে নিয়েছে বিজেপি। আসন্ন নির্বাচনেও যে এই ভোট কাটাকাটি ফ্যাক্টর হতে পারে তা বুঝে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেজন্যই ভোটারদের উদ্দেশে তাঁর সতর্কবার্তা, “কংগ্রেস-সিপিএমকে (CPM) ভোট দেবেন না। অনেক হয়েছে। ভোট ভাগাভাগিতে যাবেন না। সিপিএমকে দেবেন না, অনেক দিয়েছেন। সিপিএম-কংগ্রেস বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। মনে রাখবেন তৃণমূল কংগ্রেস মরে যাবে কিন্তু বিজেপির কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।”
পাশাপাশি বিজেপির উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “মমতাকে হারানোর ক্ষমতা তোমাদের নেই। কারণ মমতা একা নয়, মমতার সঙ্গে মানুষ আছে।” সুকৌশলে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই জেলায় এনআরসি আতঙ্কও উসকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলে দিয়েছেন, “বাংলায় ওঁরা বারবার কেন আসছে জানেন? কারণ, ওঁরা দিল্লি থেকে বাংলাকে শাসন করতে চায়। দিল্লি থেকে বসে দাঙ্গা বাঁধাবে। এনপিআর আর এনআরসি করবে। তাই বিজেপিকে একটা ভোটও দেবেন না। ২০২১-এ তৃণমূল আরও বেশি সংখ্যক আসন নিয়ে ফিরে আসবে। বাংলায় জিতব, এরপর ভারতবর্ষটাকেও দেখব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.