Advertisement
Advertisement
West Bengal

সম্পত্তির লোভে বাবাকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দিল ছেলে, বিজেপি নেতার কুকীর্তিতে শোরগোল

নেপথ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের তত্ত্বও উঠে আসছে।

West Bengal news in Bengali: BJP leader accused of murdering father over property dispute at Diamod Harbour| Sangbad Pratidin
Published by: Abhisek Rakshit
  • Posted:October 2, 2020 8:24 pm
  • Updated:October 2, 2020 8:24 pm  

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: সামান্য সম্পত্তির লোভে অশীতিপর অথর্ব বাবাকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার (South 24 Parganas) এক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। পেশায় স্কুলশিক্ষক সহদেব নস্কর নামে ওই BJP নেতা রায়দিঘি বিধানসভায় দলের আহ্বায়ক এবং মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সহ-সভাপতি।

জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম সুখময় নস্কর। তাঁর বড় ছেলে জগন্নাথ নস্কর পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন, পৈতৃক সম্পত্তির লোভেই তাঁর ভাইয়ের এই কুকীর্তি। বাবাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়ায় সাহায্যকারী হিসেবে অন্য এক ভাইয়ের স্ত্রী এবং ভাইপোর বিরুদ্ধেও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। পুলিশ এই ঘটনায় অভিযুক্ত ওই মহিলা ও তাঁর পুত্রকে গ্রেপ্তার করলেও মূল অভিযুক্ত ওই বিজেপি নেতা পলাতক। শুক্রবার ধৃত দু’জনকে আদালতে তোলা হলে ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবন পুলিশ জেলার মথুরাপুর থানার কৃষ্ণচন্দ্রপুরের বাসিন্দা পঁচাশি বছরের ওই বৃদ্ধ ঘরে কোনওরকমে দেওয়াল ধরে হাঁটাচলা করতে পারতেন। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে সেই বৃদ্ধেরই একটি পেয়ারা গাছের উঁচু ডাল থেকে ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারকে ঘিরে সম্প্রতি ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা এলাকায়।

Advertisement

[আরও পড়ুন:‌ রেলে চাকরির নামে প্রতারণা কাণ্ডে বিজেপি যোগ! উঃ ২৪ পরগনা থেকে ধৃত এক নেতা-সহ ২]

এরপরই জগন্নাথ নস্করের অভিযোগ, বালিগঞ্জের একটি স্কুলের শিক্ষক সহদেবের সঙ্গে মেজো ভাইয়ের স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্কের কথা জেনে যায় বাড়ির লোক। তার প্রতিবাদ করায় সহদেব মেজো ভাই বলরাম ও সেজো ভাই সুদর্শনকে মারধর করে বাড়ি থেকে বেরও করে দেয়। তাঁকেও কিছুদিন আগে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করে। সহদেবের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তাঁরা ভাইরা সকলেই অন্যত্র থাকতেন। বোন ও দিদিরা বিবাহিতা। তাই ৭৬ বছরের বৃদ্ধা মা বীনাপাণি দেবী ও বাবা সুখময়বাবুর সঙ্গে একই বাড়িতে থাকত অবিবাহিত সহদেব, মেজো ভাইয়ের স্ত্রী নমিতা নস্কর ও নমিতার ছেলে সুমন্ত।

জগন্নাথবাবু আরও জানান, পৈত্রিক সম্পত্তির অধিকাংশটা জোর করে বৃদ্ধ বাবাকে দিয়ে আগেই লিখিয়ে নিয়েছিলেন সহদেব, নমিতা ও ভাইপো সুমন্ত। বাকি ছিল কেবল দোতলা বসতবাড়িটি। সেই বাড়িও নিজের নামে লিখে দেওয়ার জন্য কয়েকদিন ধরেই বৃদ্ধ বাবার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছিল তাঁর ভাই সহদেব। বৃহস্পতিবার থেকে তাঁর মায়ের সামনেই বাবার ওপর ওই তিনজনের অত্যাচার চরমে ওঠে। পুলিশকে তিনি জানান, তাঁর মা তাঁকে জানিয়েছেন, ভাই সহদেব, ভ্রাতৃবধূ নমিতা ও ভাইপো সুমন্ত বৃদ্ধ বাবাকে ব্যাপক মারধরের পর তাঁকে টানতে টানতে বাড়ির বাইরেও নিয়ে চলে যায়। মা বীনাপাণিদেবী আটকাতে গেলে তাঁকে একটি ঘরে আটকে রেখে যায় তারা।

এরপর তাঁর কারখানার এক কর্মী ফোনে তাঁকে জানান, বাড়ির অদূরেই একটি পেয়ারা গাছে তাঁর বাবার দেহ ঝুলছে। ভালো করে হাঁটাচলা করতে না পারা পঁচাশি বছরের বৃদ্ধের পক্ষে অত উঁচু গাছে উঠে গলায় দড়ি দেওয়া আদৌ সম্ভব কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিকে মা’‌কে সঙ্গে নিয়ে থানায় ওই তিনজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান জগন্নাথবাবু।

[আরও পড়ুন:‌ ছেলের প্রেমিকার উপর অ্যাসিড হামলা মায়ের, নির্যাতিতার বয়ানে গ্রেপ্তার অভিযুক্ত-সহ ৩]

দু’‌জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও মূল অভিযুক্ত ওই বিজেপি নেতা সহদেব নস্কর এখনও পলাতক। পুলিশ জানিয়েছে, একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। সহদেবের খোঁজে চলছে তল্লাশি। এদিকে বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দীপঙ্কর জানা জানান, ‘‌‘‌তাঁদের জেলা সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা সহদেব নস্কর তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ীই তার শাস্তি হবে। বিজেপি অন্যায়কে কখনও প্রশ্রয় দেয় না। অন্যায় করলে শাস্তি পেতেই হবে।’‌’‌

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement