সুরজিত দেব, ডায়মন্ডহারবার: আবহাওয়ার উন্নতি হতেই গত কয়েকদিনে ইলিশবোঝাই হয়ে ট্রলার ঢুকতে শুরু করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন ঘাটে। দীর্ঘ খরা কাটিয়ে আশানুরূপ না হলেও যে পরিমাণ ইলিশ এবার জালবন্দি হয়েছে, তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে মৎস্যজীবী থেকে ট্রলারমালিক, আড়তদার সকলেই।
একের পর এক নিম্নচাপ আর উত্তাল সমুদ্র প্রতিবারই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল মৎস্যজীবীদের সামনে। এদিকে ইলিশের (Hilsa) মরশুমও প্রায় শেষের মুখে। ফলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় দিন কাটছিল মৎস্যজীবীদের। তবে গত এক সপ্তাহে সমুদ্র থেকে যে পরিমাণ রূপালি ফসল ট্রলারে তুলেছেন তাঁরা, তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে তাঁদের জীবনে।
ওয়েস্টবেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সহ-সম্পাদক বিজন মাইতি জানান, দুর্যোগ কাটতেই হাসি ফুটেছে মৎস্যজীবীদের চোখেমুখে। গত ২৮ আগস্ট সমুদ্রে ইলিশ শিকার করতে বেরিয়ে শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের সাড়ে ৫ হাজারেরও বেশি ট্রলার প্রায় ৩৫০০ টন ইলিশ জালবন্দি করতে পেরেছেন। তারমধ্যে বেশকিছু ট্রলার ইতিমধ্যে দুই জেলার বিভিন্ন ঘাটে ভিড়েওছে। বাকি ট্রলারও ফিরছে সমুদ্র থেকে। মরা কোটালে ইলিশের দেখা একবার যখন মিলেছে, তখন আগামী কয়েকদিন আরও ইলিশ জালে ধরা দেবে বলেই আশা মৎস্যজীবীদের। সমুদ্রফেরত মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন, যে ইলিশ এবার জালবন্দি হয়েছে, তা বেশ ভাল ওজনের মাছ। ৬০০-৮০০ গ্রাম ওজনের মাছও যেমন রয়েছে, ধরা দিয়েছে এক কেজি থেকে ১,২০০ গ্রামের ইলিশও।
তবে এখনও অনেকটাই ঘাটতি থাকায় বর্তমানে ইলিশ অগ্নিমূল্য। শুক্রবার কাকদ্বীপ, রায়দিঘী, ডায়মন্ডহারবারে পাইকারি বাজারে ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৬০০-৭০০ টাকায়। আবার আট-ন’শো গ্রাম থেকে এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের পাইকারি বাজারদাম পর্যায়ক্রমে এক থেকে দেড়হাজার টাকা। মরশুমের বেশিরভাগ সময়ই সেভাবে ইলিশের দেখা মেলেনি পাইকারি ও খুচরো বাজারগুলিতে। বিরাট ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে ইলিশ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার মানুষকে। তবে আপাতত মোটামুটি বড়মাপের ইলিশের দেখা মিলছে বাজারে। ইলিশের বাকি মরশুমে রাজ্যের আড়তগুলিতে যদি আরও ১২ থেকে ১৫ হাজার টন মতো ইলিশের আমদানি হয়, তবে কিছুটা অন্তত লাভবান হবেন এই মৎস্যজীবী-সহ বাকিরা। আশা এমনটাই।]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.