সন্দীপ চক্রবর্তী: বাংলার স্কুলছুটদের ভিনরাজ্যে কাজে যাওয়া আটকাতে রাজ্যের জুটমিলে (Jute Mill) প্রশিক্ষণের পর চাকরির পরিকল্পনা নিয়েছে নবান্ন (Nabanna)। পরিযায়ী আটকাতে দক্ষিণবঙ্গের সব এমপ্লয়মেন্ট অফিসারদের এ ব্যাপারে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। রাজ্যের উদ্যোগে সায় দিয়েছেন মিল মালিকরাও।
প্রথম দফায় আগামী ২০ আগস্ট পর্যন্ত অন্তত চার হাজার যুবককে চাকরি দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। আপাতত ৭০টি জুটমিল ৭০ হাজার নিয়োগের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছে শ্রম দপ্তরকে (Department of Labor)। দু’ধাপে মোট ৯০ দিন প্রশিক্ষণের পর হবে স্থায়ী চাকরি। তখন দৈনিক বেতন ৩৭০ টাকা। মূলত জুটমিলের স্পিনিং ও উইভিং বিভাগে হচ্ছে এই চাকরি।
ধাপে ধাপে জঙ্গলমহলের পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের যুবকদের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। বন্দুক ছেড়ে সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে শালবনির দু’জন নিয়েছেন প্রশিক্ষণ। লাল্টু মাহাতো জানালেন, ভিন রাজ্যে পেপার মিলে কাজ করতেন। এবার আর রাজ্য ছেড়ে যেতে চাইছেন না তিনি। ১৯ জুলাই কলকাতার কাঁকুড়গাছির উৎসব মঞ্চে শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না, দপ্তরের সচিব, উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং মিল মালিক, ইন্ডিয়ান জুট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্তাদের বৈঠকে তৈরি হয় ‘ব্লু প্রিন্ট’।
৪৫ দিন প্রশিক্ষণকালে এঁরা পাবেন ২০০ টাকা ও খাওয়া বাবদ ৮০ টাকা। এর পরের ধাপে ২০০ টাকা বেড়ে হচ্ছে ২৫০ টাকা। থাকা ও খাওয়া নিখরচায়। প্রশিক্ষণের পর দৈনিক বেতন হবে ৩৭০ টাকা। এর সঙ্গে অন্য ভাতা যুক্ত থাকবে। থাকছে হাজিরার জন্য ১৫ টাকা উৎসাহ ভাতা, পিএফ, ইএসআই, বোনাস, গ্র্যাচুইটি, মহার্ঘভাতা, বাড়িভাড়া ভাতা, উৎসবের ছুটির মঞ্জুরি, সংবিধিবদ্ধ ছুটি ও পেনশনও।
ফ্লেক্স ও ব্যানারের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে মরিয়া গরিব চাকরিপ্রার্থী যুবকদের কাছে কাজের খবর পৌঁছেও দিচ্ছে দপ্তর। রাজ্যের শ্রম দপ্তরের উদ্যোগে রাজ্যের বৃহত্তম জুটমিল হুকুমচাঁদ জুটমিল বা অন্য মিলে সরাসরি কাজের সুযোগ। লেখা হয়েছে, ‘অন্য রাজ্যে গিয়ে নয়, নিজের রাজ্যে জুট শিল্পে শ্রমিকের কাজ করুন। মাথা তুলে বাঁচুন’। চাকরির যোগ্যতা হিসাবে ধরা হয়েছে, শারীরিকভাবে সক্ষম ও কর্মঠ সাক্ষর কর্মপ্রার্থী, ১৮ থেকে ৪০ বছরের।
পরিকল্পনামাফিক কাজ কতটা এগোচ্ছে সে ব্যাপারে মূল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক জেলার ডিএম-কে। জেলাগুলির কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্র প্রচার ও প্রশিক্ষণের তালিকা তৈরির দায়িত্বে। ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলার এমপ্লয়মেন্ট অফিসার অরুণাভ দত্ত জানান, নয়াগ্রাম, লালগড়, গোপীবল্লভপুর, বিনপুর, গিধনি, শিলদার অষ্টম থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ যুবকেরা এসে নাম লেখাচ্ছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.