সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: দুয়ারে ভোট। তাই ডিসেম্বরের পয়লা তারিখ থেকেই মানুষের ‘দুয়ারে সরকার’। নাগরিক পরিষেবা সংক্রান্ত ১২ প্রকল্প-সহ
অভাব, অভিযোগ, সমস্যা শুনতে মঙ্গলবার থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ঘোষিত এই প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে। রাজ্যের সমস্ত পঞ্চায়েত এলাকায় ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লকের সমস্ত পরিকাঠামো নিয়ে প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আগামী দু’মাস ধরে চারটি পর্যায়ে হবে শিবির। এখান থেকে ১২টি পরিষেবা সংক্রান্ত প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা কার্যত ঘরের দুয়ারে গিয়ে হাতে হাতে পৌঁছে দেবে প্রশাসন। সেই সঙ্গে জনসাধারণের অভাব, অভিযোগ ও সমস্যার কথাও শুনবেন প্রশাসনের কর্মীরা।
গত সপ্তাহে বাঁকুড়ার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে এবার চালু হচ্ছে ‘দুয়ারে দুয়ারে সরকার’ নামে কর্মসূচি। এমনকী বঞ্চনা-উপেক্ষার কথাও নির্দিষ্ট বয়ানে তা লিখে দিতে হবে। তার জন্য থাকবে ড্রপ বক্স। আগামী দু’মাস ধরে এই কাজ সফলভাবে করতে জঙ্গলমহল পুরুলিয়ায় (Purulia) জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। রবিবার এ নিয়ে জেলা প্রশাসনিক ভবনে বিডিও, মহকুমাশাসক ও
অতিরিক্ত জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠক করেন জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “এই কর্মসূচি কীভাবে রূপায়ণ করতে হবে, তা ব্লক থেকে পঞ্চায়েত স্তরে বলে দেওয়া হয়েছে। মোট ১২ প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা আমরা শিবিরের মাধ্যমে সাধারণ মানুষজনের একেবারে ঘরের দুয়ারে পৌঁছে দেব। ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচিকে ঘিরে মানুষজনের বেশ উৎসাহও দেখছি।” জানা গিয়েছে, চারটি পর্যায়ে একদিন করে মাসে মোট চারদিন এই শিবির হবে।
‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে যে ১২ টি প্রকল্পের পরিষেবা মিলবে, তা দেখে নিন একঝলকে –
খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের স্বাস্থ্যসাথী, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগের জাতিগত শংসাপত্র ও শিক্ষাশ্রী, আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগের জয় জোহার, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ বিভাগের তফসিলি বন্ধু, নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ বিভাগের কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের ঐক্যশ্রী, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগের MGNREGA বা একশো দিনের কাজ। এছাড়া কৃষি দপ্তরের কৃষক বন্ধু এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের মিউটেশন।
গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা, স্কুল-কলেজ ভবন, কমিউনিটি হল-সহ সরকারের সুবিধামত প্রতিষ্ঠানে কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিবিরের আয়োজন হবে। প্রত্যেকটি প্রকল্পের জন্য পৃথক ঘর বা কাউন্টার থাকবে। সেখানে পঞ্চায়েতের কর্মীরা আবেদনপত্র সংগ্রহ করে পরিষেবা দেবেন। এছাড়া সাধারণের নানা সমস্যার সমস্যার কথা শোনার জন্যও আলাদা ঘর থাকবে। সেখানে থাকবেন বিডিও এবং ওসি। প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবিরেই ব্লকের এক
একজন সম্প্রসারণ আধিকারিক থাকবেন।
এছাড়া প্রত্যেক মহকুমায় মহকুমাশাসক ছাড়াও অতিরিক্ত জেলাশাসকরাও এই কর্মসূচির তদারকি করবেন। শিবিরে ঘুরবেন জেলাশাসকও। এই কর্মসূচির চারটি পর্যায়ের প্রথমটি হবে ১ থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয়টি ১৫ থেকে ২৪ ডিসেম্বর, তৃতীয় পর্যায়ে ২ থেকে ১২ জানুয়ারি এবং চতুর্থটি হবে ১৮ থেকে ২৮ জানুয়ারি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.