ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ফের রেশনের খাদ্যসামগ্রী (Low quality ration) নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করল রাজ্য (West Bengal Govt)। পোকা ধরা ছোলা, আকারে ছোট, একটু চাপ দিলেই গুঁড়ো হয়ে যাচ্ছে, গমের চেহারাও ভাল নয়। কালচে, অনেকটাই নষ্ট। এমনই খারাপ মানের সামগ্রী পাঠানো হয়েছে ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ খাদ্য যোজনা’র গ্রাহকদের জন্য। অভিযোগ রাজ্যের খাদ্যদপ্তরের। ছোলা বরাদ্দ ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ খাদ্য যোজনা’র গ্রাহকদের জন্য আর গম পাবেন ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ খাদ্য যোজনা’ ও রাজ্যের ‘খাদ্যসুরক্ষা’র আওতায় থাকা গ্রাহকরা। এখন এই মানের ছোলা, গম বণ্টন করতে চাইলে গ্রাহকরা তো নেবেই না, উপরন্তু বড় মাত্রায় বিক্ষোভের আশঙ্কায় কাঁপছে খাদ্য দপ্তর।
এই পোকা ধরা ছোলা বা গম কোথা থেকে আসছে? গম উৎপাদন এ রাজ্যে হয় না। সবটাই সরবরাহ করে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (FCI)। আবার ছোলাও পাঠাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন সংস্থা নাফেড। তাদের তরফেই আসছে এমন নিম্নমানের রেশন সামগ্রী। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের বিবাদ বাঁধতে পারে বলে মনে করছেন খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা। রেশন ডিলারদের আশঙ্কার বিষয়টি বাস্তব বলেই তাঁদের ধারণা। এক আধিকারিকের কথায়, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তা ছাড়া রেশন ডিলাররাও আলাদা করে জানিয়েছেন। সচিবকেও জানানো হয়েছে।”
কিন্তু এই ধরনের খারাপ ও নিম্নমানে শস্য পাঠানোর কারণ কী? আরেক আধিকারিকের কথায়, “হতে পারে বিষয়টি তাদের নজর এড়িয়ে গিয়েছে।” কিন্তু প্রচুর পরিমাণে শস্য বস্তায় ভরে পাঠানোর আগে কি কেউ দেখেনি? নাকি মান খারাপ থাকায় বস্তাতেই সেসব নষ্ট হয়েছে? ওই আধিকারিকের বক্তব্য, “বিষয়টি সংশ্লিষ্ট জায়গায় জানানো হয়েছে। এমন ছোলা বা গম তো আমরা গ্রাহকদের দিতে পারি না।” এই অবস্থায় গ্রাহকরা কি তবে রেশন দোকান থেকে খালি হাতে ফিরবেন? তাঁর কথায়, “ছোলা বা গম কোনওটাই আমরা দিচ্ছি না। গম আমাদের প্রকল্পের আওতায় পড়লেও তা পাঠায় এফসিআই। ফলে এর দায় রাজ্য সরকারের নয়। কেন কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থাগুলি এমন খাদ্যসামগ্রী পাঠাল, তা জানতে চাওয়া হবে।” রেশন ডিলারদের বক্তব্য, এত সংখ্যক গ্রাহককে রেশন দিতে গিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। পচা ছোলা বা নষ্ট হওয়া গম দিলে আরেক বিপদ। দায় পড়বে রাজ্যের সরকারের উপর। অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসুর কথায়, “গোটা বিষয়টাই জানানো হয়েছে দফতরের সচিবকে। এমন পচা ছোলা বা গম বদলে দিতে বলা হয়েছে। আশা করি দ্রুত এ নিয়ে পদক্ষেপ হবে।”
এর মধ্যেই ‘খাদ্যসাথী’ প্রকল্পের ফুড কুপন নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঠিক হয়েছে, ডিজিটাল কার্ডের বদলে যে ফুড কুপন ছাপানো হচ্ছে, এবার থেকে তাদের গায়ে বারকোড দেওয়া থাকবে। ওই বারকোড থেকেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে বোঝা যাবে গ্রাহক কতটা শস্য নিয়েছেন। এছাড়া নির্দিষ্ট গ্রাহকের কুপন তৈরি হয়ে গেলেই তিনি দপ্তর থেকে একটি মেসেজ পাবেন। গ্রাহকের বরাদ্দ নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.