অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: কেকে’র (Singer KK) মৃত্যুতে ইতিমধ্যেই লেগেছে রাজনীতির রং। দিলীপ ঘোষের পর রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও এই প্রসঙ্গে একই সুরে সরব। সংগীতশিল্পীর মৃত্যুর জন্য গাফিলতিকেই কাঠগড়ায় তুললেন রাজ্যপাল। কার বা কাদের গাফিলতিতে এই ঘটনাটি ঘটল, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানালেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।
দার্জিলিং সফর সেরে ফেরার পথে শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে কেকে’র মৃত্যু প্রসঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar) বলেন, “এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমাকে অনেকে নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠানের ভিডিও পাঠিয়েছেন। আমি দেখেছি। অনুষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনায় বিস্তর গাফিলতি ছিল। তার প্রমাণ ভিডিওগুলিতেই পাওয়া গিয়েছে। দর্শকদের ভিড় সামাল দিতে ব্যর্থ প্রশাসন। কার বা কাদের গাফিলতিতে এই ঘটনা ঘটল, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।” রাজ্যপালকে পালটা জবাব দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর তোপ, “রাজ্যপালের উচিত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর চেয়ারে গিয়ে বসা।”
উল্লেখ্য, গুরুদাস কলেজের ফেস্টে ভিড়ে ঠাসা নজরুল মঞ্চে মঙ্গলবার রাতে শেষবার অনুষ্ঠান করেন কেকে। ওই অনুষ্ঠান চলাকালীন অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন সংগীতশিল্পী। গরম লাগছে বলে জানান। প্রচণ্ড ঘামতে থাকেন। জোরাল আলো নিভিয়ে দিতে বলেছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে কলকাতার অভিজাত পাঁচতারা হোটেলে পৌঁছন কেকে। লিফটে ওঠার সময় অসুস্থতা আরও বাড়তে থাকে। তা সত্ত্বেও লিফটে ওঠার সময় বেশ কয়েকজন অনুরাগীর সঙ্গে সেলফি তোলেন। হোটেলে ঢুকে সোফায় বসতে গিয়েই পড়ে যান। সেই সময় টেবিলে ধাক্কা লেগে সামান্য চোট পান কেকে। অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলাও রুজু হয়। তবে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে আসার পর অস্বাভাবিক মৃত্যুর তত্ত্ব খারিজ করেন তদন্তকারীরা। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, বাঁদিকের ধমনীতে থাকা ৭০ শতাংশ ব্লকেজের ফলে মৃত্যু কেকে’র। অতিরিক্ত উত্তেজনায় সেই ব্লকেজ বেড়ে আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় রক্ত চলাচল। পরিণতি, কার্ডিয়াক অ্যাটাক এবং কেকে’র অকাল প্রয়াণ।
যদিও সেকথা মানতে নারাজ রাজনীতিকরা। দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) দাবি করেন, চক্রান্ত করে কেকে’কে খুন করা হয়েছে। সত্য ধামাচাপা দিতেই গান স্যালুট দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতির। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিও জানান তিনি। সেই একই সুরে রাজ্যপালও কেকে’র মৃত্যুর জন্য ‘গাফিলতি’কেই দায়ী করলেন। রাজ্যপালের এই মন্তব্যের ফলে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাত যে আরও একবার প্রকট হল, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.