সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের প্রকাশ্যে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। রাজ্য বিস্ফোরকের আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে বলেই অভিযোগ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের। রবিবার বারাসতের গঙ্গানগরে একটি অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে ফের বিতর্কে জড়ান তিনি। রাজ্যপালের মন্তব্যকে মোটেও ভাল চোখে দেখছেন না রাজ্যের শাসকদল। পালটা কড়া ভাষায় রাজ্যপালের সমালোচনা করেছে তৃণমূল।
রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে প্রারম্ভিক বক্তব্য নিয়ে প্রাথমিকভাবে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তবে তা সত্ত্বেও সমস্ত জটিলতাকে উপেক্ষা করে রাজ্যের বয়ানই পাঠ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালের কথাবার্তার ভঙ্গিমায় অনেকেই মনে করেছিলেন বোধহয় দু’পক্ষের সংঘাত শেষ হল।
কিন্তু তার ৪৮ ঘণ্টা যেতে না যেতেই আবারও সংঘাতে জড়ালেন রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী। রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের গঙ্গানগরে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন জগদীপ ধনকড়। তিনি বলেন, “রাজ্য বিস্ফোরকের মুক্তাঞ্চল। পশ্চিমবঙ্গকে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর বানাতে দেওয়া যাবে না। সন্ত্রাসের পরিবেশে কীভাবে ভোট হবে? রামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ শান্তির কথা বলতেন। আর সেই বাংলাতেই রেললাইন উপড়ানো হচ্ছে। সংস্কৃতির পীঠস্থান কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গকে আমরা সন্ত্রাসের আড্ডা বানাতে পারি না। বিস্ফোরণের ফলে ক্ষয়ক্ষতি হলে আমি দুঃখ পাই।” রাজ্যপালের এই বক্তব্যে অত্যন্ত বিরক্ত শাসকদল। কীভাবে একজন রাজ্যপাল অকারণে রাজ্যের সমালোচনা করতে পারেন সেই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
রাজনৈতিক মহলে কান পাতলেই ফের রাজ্যপাল এবং রাজ্যের সংঘাত নিয়ে আলোচনা শোনা যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, রাজ্য যে ক্রমাগত বিস্ফোরকের আঁতুড়ঘর হয়ে যাচ্ছে, তা কি রাজ্যপাল রবিবার প্রথম বুঝলেন? আর যদি আগেও তিনি বুঝে থাকেন তাহলে রাজ্য বিধানসভার প্রারম্ভিক সভায় ‘আমার সরকার’ বলে সম্বোধন করার পরে বিস্ফোরক মজুতের ঘটনা রুখতে না পারার দায় কি তাঁর উপরেও বর্তায় না? রাজ্যে নৈহাটি কিংবা খাগড়াগড়ের মতো ঘটনা তো আগেই ঘটেছে। তাও তিনি আগে এ বিষয়ে এমন কড়া সমালোচনার পথে হাঁটলেন না কেন? আবার রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, বাজেট অধিবেশনের প্রারম্ভিক সভায় নিজের মতো কিছু বলতে না পারার কারণে অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিরুদ্ধে সমালোচনার সুর চড়ালেন রাজ্যপাল।
দায়িত্ব নেওয়ার পরই রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠকের ডাক দেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সেই থেকে সংঘাতের সূত্রপাত। একের পর এক ঘটনায় দূরত্ব বেড়েছে ক্রমশ। তবে চলতি বছর সাধারণতন্ত্র দিবসে মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যপালের আমন্ত্রণে চা চক্রে উপস্থিতি দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন সম্পর্কের মোড় বোধহয় ঘুরল।
কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হল কই? বরং রাজ্যপালের এদিনের ‘বিস্ফোরক’ মন্তব্যে অনেকেই মনে করছে যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে দু’পক্ষের সম্পর্ক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.