সৌরভ মাজি, বর্ধমান: চিনের সেনঝেনে ফের বিপাকে বাঙালি দম্পতি। করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে কাঁটা তাঁরা। বেশ কয়েকবছর আগে বর্ধমানের দেওয়ানদিঘির নবীনগরের বাসিন্দা শেখ আল হিলাল, স্ত্রী এবং সন্তানকে নিয়ে চিনে পাড়ি দেন। সেনঝেনে এখনও কেউ করোনা আক্রান্ত আক্রান্ত হননি। তবে তা সত্ত্বেও গৃহবন্দি অবস্থায় দিন কাটছে তাঁর। যেকোনও উপায়ে দেশে ফেরার জন্য উদগ্রীব ওই বাঙালি দম্পতি।
আল হিলাল ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত চিনে ছিলেন। তারপর ফিরে আসেন ভারতে। ফের ২০১৭ সালে চিনের সেনঝেনে যান ব্যবসার জন্য। কয়েকমাস আগে বাড়ি এসেছিলেন আল হিলাল। নভেম্বরে ফের চিনে গিয়েছেন। এখন ব্যবসা কার্যত বন্ধ। মিলছে না পর্যাপ্ত খাবার। চরম সমস্যায় দিন কাটছে তাঁদের। আল হিলালের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, ইউহান থেকে ১ হাজার কিলোমিটার দূরে সেনঝেন। সেখানে করোনার প্রকোপ দেখা না দিলেও আতঙ্কে রয়েছেন তাঁরা। রাস্তাঘাট ফাঁকা। খাবারও পর্যাপ্ত মিলছে না। দেশে ফেরার ইচ্ছা থাকলেও ভয় পাচ্ছেন। বাইরে বেরোলে যদি আক্রান্ত হয়ে পড়েন কেউ। সঙ্গে বাচ্চা থাকায় আতঙ্ক বেড়েছে। এখন সেখানে নববর্যের উৎসবের মরশুম। কিন্তু রাস্তাঘাট, সুপার মার্কেট দেখে তা বোঝার উপায় নেই। খাঁ খাঁ করছে পথঘাট, বাজারহাট। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন বিধিনিষেধও আরোপ করা হয়েছে। রেলে যাতায়াত করতে গেলে মাস্ক লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু আতঙ্ক এতটাই সকলকে গ্রাস করেছে যে কেউই বাইরে বিশেষ বেরোচ্ছেন না। প্রতিটি ফ্ল্যাটে বাসিন্দাদের শরীরের তাপমাত্রা চেকিংয়েরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ছেলে, বউমা, নাতি চিনের সেনঝেনে আটকে পড়ায় উদ্বিগ্ন পরিবার। নবীনগরের বাড়িতে চরম আতঙ্কে দিন কাটছে শেখ আল হিলালের বাবা জয়নাল আবেদিন এবং তাঁর স্ত্রী হালিমা বিবির। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ছেলে চিনে বস্ত্র বিপণী করছে। বউমা, নাতিও রয়েছে সেখানে। খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছি। চিনে যেভাবে করোনা হানা দিয়েছে তাতে রাতের ঘুম উড়ে যাচ্ছে আমাদের।” শেখ আল হিলালের মা হালিমা বিবিও দু’চোখের পাতা এক করতে পারছেন না।
শেখ আল হিলালের মতোই দুশ্চিন্তার প্রহর গুনছেন পূর্ব বর্ধমানের আরও দুই পরিবারের সদল্যরা। করোনা ভাইরাসের প্রকোপে চিনের ইউহান শহরে আটকে রয়েছেন সুজিতবাবুর ছেলে সাম্যকুমার রায়। তিনি ইউহানে গবেষণা করছেন। কার্যত গৃহবন্দি হয়েই রয়েছে বাঙালি গবেষক। দেশে ফেরারও ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন তিনি। তবে এখনও পর্যন্ত চিন বা ভারত সরকারের তরফ থেকে কোনও সাহায্য পাননি তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.