ফাইল ফটো
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউনে বন্ধ রোজগার। ছেলে-মেয়ের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছিলেন না। অবেশেষে নিজের নাড়িছেঁড়া ধনকে অন্যের কাছে বিক্রি করে বাকি দুই সন্তানের খাবার জোগার করলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের এক দম্পতি। এই ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ ও চাইল্ডলাইনের কর্মীরা আড়াই মাসের কন্যাসন্তানকে উদ্ধার করে ঘাটালের হাসপাতালে ভরতি করেছেন। মাত্র তিন হাজার টাকার বিনিময়ে দু’মাসের কন্যাসন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন ওই দম্পতি।
ঘাটাল শহরের বাসিন্দা বাপন ও তাপসী ধাড়া। তাঁদের তিন সন্তান। পাঁচ বছরের ছেলে, আড়াই বছরের ও দু মাসের দুই মেয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাপসী অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। বাপন বেকার। বরং দিনভর নেশায় ডুবে থাকে সে। এতদিন যেতেতেন প্রকারে খাবারের জোগান হচ্ছিল। কিন্তু লকডাউনের জেরে তাপসীর কাজ বন্ধ। ফলে ছেলে-মেয়েদের মুখে খাবারের জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তাঁরা। শেষপর্যন্ত নিজের নাড়িছেঁড়া ধনকে হাওড়ার এক আত্মীয়ের কাছে বিক্রি করে দেন। তাও মাত্র তিন হাজার টাকার বিনিময়ে। জানা গিয়েছে, তাপসীর বাপের বাড়ির মাধ্যমেই হাওড়ার ওই দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল।
রাতের অন্ধকারে মেয়েকে হাওড়ার শ্যামপুর এলাকা ওই নিঃসন্তান আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন ধাড়া দম্পতি। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। খবর পেয়েই তাকে উদ্ধার করে পুলিশ ও চাইল্ডলাইনের সদস্যরা। ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করেন। এদিকে মেয়েকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে শুনেই ভয়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত দম্পতি।জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপকুমার দাস বলেন, ‘পুলিশের সহযোগিতায় শিশুটিকে মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার করে নিয়ে এসে ঘাটাল হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। কী কারণে বাবা-মা শিশুটিকে দিয়ে দিয়েছিলেন, পুলিশ তা তদন্ত করে দেখছে।’ তবে এই ঘটনায় আরও একবার লকডাউনের ভয়ংকর দিকটা সামনে নিয়ে এল। খাবার জোগার করতে শেষে নিজের পেটের সন্তানকে বিক্রি করতে বাধ্য হলেন ওই দম্পতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.