Advertisement
Advertisement

Breaking News

West Bengal assembly polls

‘গড়’ ধরে রাখতে পারবে অধিকারীরা? কী বলছে পূর্ব মেদিনীপুরের ভোটচিত্র

পুরনো সৈনিককে হারিয়ে কতটা চাপে তৃণমূল?

West Bengal assembly polls: Will Suvendu Adhikari bag Purba Medinipur | Sangbad Pratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:March 9, 2021 5:40 pm
  • Updated:March 9, 2021 5:40 pm  

রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ‘অধিকারীদের গড়’ বলেই পরিচিত দীর্ঘদিন ধরে। তৃণমূলের হয়ে গত এক দশক এই জেলায় দাপিয়ে ‘খেলেছেন’ শুভেন্দু অধিকারীরা। কিন্তু এবার বদলেছে পরিস্থিতি। অধিকারী বাড়ির দুই সদস্য ইতিমধ্যেই বিজেপিতে। পা বাড়িয়ে বাকিরাও। বিচ্ছেদের পর এই জেলায় কার আধিপত্য থাকবে? জেলার ভোটচিত্র বলছে, বিজেপিতে গিয়ে অধিকারীরা বা অধিকারীহীন তৃণমূল, কোনও পক্ষই এখনই জেলায় একাধিপত্য দাবি করার জায়গায় নেই। অধিকারীরা দলত্যাগ করায় শাসক শিবিরের যা ক্ষতি হয়েছিল, তার অনেকাংশ সামলে নিলেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত শাসক শিবির। আবার জেলার অনেক ভোটারই শুভেন্দু অধিকারীর নতুন অবতার মানতে পারছেন না। যার জেরে পূর্ব মেদিনীপুরে স্পষ্ট কাউকে ফেভারিট বলে দেওয়াটা অত্যুক্তি করা হবে। তবে, ওয়াকিবহাল মহল বলছে, ৫০-৫০ লড়াই হলেও সামান্য এগিয়ে জেলার ভূমিপুত্র অর্থাৎ শুভেন্দু। তবে শাসক শিবিরও কিন্তু পুরোদস্তুর লড়াইয়ে আছে। 

দক্ষিণ কাঁথি – ২০১৬সালের বিধানসভা নির্বাচনে দক্ষিণ কাঁথি আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হন দিব্যেন্দু অধিকারী। তিনি সিপিআই প্রার্থী উত্তম প্রধানকে ৩৩,৮৯০ভোটে পরাস্ত করেন। পরে ২০১৭সালে দাদা শুভেন্দু অধিকারীর ছেড়ে যাওয়া তমলুক লোকসভা আসনে প্রার্থী হন দিব্যেন্দু। ফলে উপ নির্বাচনে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বিজেপির সৌরিন্দ্রমোহন জানাকে ৪২,৫২৬ভোটে পরাজিত করে জয়ী হন। এবার এই কেন্দ্রে প্রার্থী পটাশপুরের বিধায়ক জোতির্ময় কর।

Advertisement

উত্তর কাঁথি – বিধানসভা কেন্দ্রের দু’বারের বিধায়ক বনশ্রী মাইতি। তিনি ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী সিপিএমের চক্রধর মেইকাপকে ১৮,৫৭৬ ভোটে পরাস্ত করেন। ইতিমধ্যে বনশ্রী দেবী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তার জায়গায় তৃণমূল প্রার্থী করা হয়েছে দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তরুণ জানাকে।

রামনগর – এই কেন্দ্রে একই মুখ থাকছে। ২০১৬সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধী সিপিআই প্রার্থী তাপস সিনহাকে ২৮,২৫৩ ভোটে পরাজিত করে জয়ী হয়েছিলেন। এবার তৃতীয় বারের জন্যে রামনগর কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে অখিল গিরিকেই।

এগরা – বিধায়ক ছিলেন সমরেশ দাস। তিনি বিরোধী ডিএসপি প্রার্থী মামুদ হোসেনকে ২৫,৯৫৬ভোটে পরাস্ত করে জয়ী হন। করোনা আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু ঘটায় সেই কেন্দ্রটি ফাঁকাই ছিল। এবার সেই আসনে প্রার্থী করা হয়েছে তরুণ মাইতিকে। তিনি পানিপারুল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। জেলা প্রাথমিক সংসদের চেয়ারম্যান।

পটাশপুর – এই কেন্দ্রের দু’বারের বিধায়ক জোতির্ময় কর। তিনি বামফ্রন্ট প্রার্থী মাখনলাল নায়ককে ২৯,৮৮৮ভোটে পরাস্ত করে জয়ী হন।

[আরও পড়ুন: ব্লু-টুথ স্পিকারে গান শোনা নিয়ে বচসা! খড়গপুরে মদের আসরে বন্ধুর হাতে খুন যুবক]

ভগবানপুর – এই কেন্দ্রে তৃতীয় বারের জন্যে প্রার্থী হয়েছেন অর্ধেন্দু মাইতি। তিনি ২০১৬ সালে বিরোধী কংগ্রেস প্রার্থী হিমাংশু শেখর মহাপাত্রকে ৩১,৯৪৩ ভোটে পরাস্ত করে জয়ী হয়েছিলেন।

খেজুরি – এই কেন্দ্রের দু’বারের তৃণমূলের বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল। তিনি ২০১৬সালে বিরোধী প্রার্থী বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী অসীম কুমার মণ্ডলকে ৪২,৪৮৫ ভোটে পরাজিত করে জয়ী হয়েছিলেন। রণজিৎ মণ্ডলের রাজনৈতিক অবস্থান এখন স্পষ্ট নয়। তাই এবার তাঁকে সরিয়ে জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ ডাঃ পার্থপ্রতিম দাসকে প্রার্থী করা হয়েছে।

চন্ডীপুর – এই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন অমিয় ভট্টাচার্য। তিনি ২০১৬সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধী বামফ্রন্ট প্রার্থী মঙ্গলচাঁদ প্রধান কে ৯৬৫৪ভোটে পরাস্ত করে জয়ী হন। এবার সেখানে প্রার্থী নতুন মুখ, অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী।

নন্দকুমার – এই আসনে তৃতীয় বারের জন্যে তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন সুকুমার দে। গতবার বিরোধী বামফ্রন্ট সমর্থিত নির্দল প্রার্থী সিরাজ খানকে ১০,৮৬৪ভোটে পরাজিত করে জয়ী হন।

নন্দীগ্রাম – বিধায়ক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বামফ্রন্ট(সিপিআই) প্রার্থী আবদুল কবীর শেখকে ৮১,২৩০ভোটে হারান। শুভেন্দু বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করে এখন বিজেপিতে। এই আসনে এবার তৃণমূলের হয়ে লড়বেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মহিষাদল – বিধায়ক ছিলেন সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার। তিনি বামফ্রন্ট প্রার্থী (সিপিআইএম) প্রার্থী ডাঃ সুব্রত মাইতিকে ১৬,৭০৯ভোটে পরাজিত করেন। তাঁর জায়গায় এবার প্রার্থী পঞ্চায়েত সমিতির-সহ সভাপতি তিলক চক্রবর্তী।

হলদিয়া – গতবার তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন মধুরিমা মণ্ডল। কিন্তু তিনি বামফ্রন্ট প্রার্থী তাপসী মণ্ডলের কাছে ২১,৫০১ভোটে পরাজিত হন। ফলে ওই আসনটি বামেদের দখলে চলে যায়। এবার সেই আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন স্বপন নষ্কর।

[আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে পা রাখছেন প্রার্থী মমতা, তৃণমূলনেত্রীর সফরের আগেই ‘বহিরাগত’ ব্যানারে চাঞ্চল্য]

তমলুক – কেন্দ্রটি বামেদের দখলে ছিল। জয়ী হয়েছিলেন বামফ্রন্ট প্রার্থী অশোককুমার দিন্দা। তিনি মাত্র ৫২০ভোটে তৃণমূল প্রার্থী নির্বেদ রায়কে পরাজিত করেছিলেন। এবার ওই আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন পিংলার বিধায়ক তথা মন্ত্রী সৌমেন কুমার মহাপাত্র।

ময়না – বিধায়ক ডাঃ সংগ্রাম দলুই এবারও থাকছেন তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে। তিনি কংগ্রেস প্রার্থী মাণিক ভৌমিককে ১২,১২৪ ভোটে পরাজিত করেন।

পশ্চিম পাঁশকুড়া – এই আসনে এবারও প্রার্থী হচ্ছেন ফিরোজা বিবি। তিনি গতবার বামফ্রন্ট(সিপিআই) প্রার্থী চিত্তরঞ্জন দাসঠাকুরকে ৩,১৪৫ ভোটে পরাজিত করেছিলেন।

পূর্ব পাঁশকুড়া – ২০১৬ সালে তৃণমূলের বিপ্লব রায় চৌধুরীকে ৪,৭৬৭ ভোটে পরাজিত করে বিধায়ক হন বামেদের শেখ ইব্রাহিম আলি। এবার এই আসনে ফের তৃণমূল প্রার্থী হচ্ছেন বিপ্লব রায় চৌধুরী।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement