বিক্রম রায়, কোচবিহার: “গুলির আওয়াজ কানে আসতেই শিউরে উঠেছিলাম। কিন্তু তখনও বুঝিনি, আামাদের কত বড় সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে!”, একথা বলতে গিয়েই ডুকরে কেঁদে ফেললেন শীতলকুচির (Sitalkuchi) সামিউল মিঞার দিদি। জানালেন, সকালে বাবা, মা-র সঙ্গে তাঁর দুই ভাই বুথে গিয়েছিল। ওরা ২ জনই এবার নতুন ভোটার। তাই ভোট দেওয়া নিয়ে খুব উৎসাহী ছিল। কিন্তু সেই ভোট যে এভাবে বড় ভাইয়ের প্রাণ কেড়ে নেব, তা কল্পনাতেও ভাবতে পারেনি কেউ।
সামিউলের দিদি বলেন, “গুলির আওয়াজ শুনেই দুই ভাইকে পরপর ফোন করি। কিন্তু ওরা কেউ ফোন তুলল না। তখনই যেন মনটা কু গেয়ে উঠল। আর ছুটে গিয়ে জানলাম, বড় ভাই আর নেই। বিশ্বাস করুন, আমার দুই ভাই রাজনীতির কিচ্ছু জানে না। বড় ভাই উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছে। ছোট ভাই এবার পরীক্ষা দেবে। আমরা গরিব মানুষ, বড় ভাই তাই কম্পিউটারের দোকানে কাজ করত। ভোট দিতে যাওয়ার পর ওই কেন্দ্রীয় বাহিনীর লোকেরা আমার ছোট ভাইকে মারধর করছিল। সেটা সহ্য করতে না পেরে বড় ভাই বাধা দিয়েছিল। এটাই নাকি ওর অপরাধ! বাহিনীর লোকেরা পিছন থেকে গুলি করে মারে ভাইকে। কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছি না, একেবারে মেরে ফেলার মতো কী দোষ করেছিল আমার ভাই!
বাহিনীর যে লোকেরা ভাইয়ের প্রাণ কেড়ে নিল, তাদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন ওই তরুণী। তাঁর কথায়, “জানি না কীভাবে সামলাব বাবা, মাকে! ‘দিদিকে’ শুধু বলব, আপনি অনেক ভাল কাজ করেছেন। সেজন্য আমরা ধন্য। কিন্তু এভাবে কোনও পরিবারের সবার কলিজা খালি করে দেওয়ার মতো ঘটনা যেন আর না ঘটে, এটা দেখবেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.